সার্বিয়ান টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচকে অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। রোববার অজি ফেডারেল আদালতের তিন সদস্যবিশিষ্ট বিচারক কমিটি নির্দেশটি দেন।
অনেক লড়াইয়ের শেষে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জোকোভিচ। আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতেও ভোলেননি টুর্নামেন্টটির সর্বোচ্চ ৯ বারের চ্যাম্পিয়ন।
‘ভিসা বাতিলের ব্যাপারে আমার আপিলটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে না পারাটা আমার জন্য হতাশাজনক। তবে আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত আমি।’
জোকোভিচের বদলে টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন সালভাটরে কারুসো। বিশ্বসেরা তারকার স্থলাভিষিক্ত ইতালিয়ানের অবস্থান বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১৫০তম। সোমবার আরেক সার্বিয়ান মিয়োমিরের বিপক্ষে মাঠে নামবেন কারুসো।
ভ্যাকসিন জটিলতায় জোকো নাটকের একেবারে শুরুটা গত ৬ জানুয়ারি। অস্ট্রেলিয়া সরকার তার ভিসা বাতিল করে দেয়। করোনা ভ্যাকসিনের তথ্য প্রকাশ না করার দায়ে মেলবোর্নের টুলামারিন বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর আট ঘণ্টা আটকেও রাখা হয়। পরে সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি আশ্রয়কেন্দ্রে রুমবন্দি রাখা হয়।
নাটকে নতুন মোড় নেয় শুক্রবার সকালে। প্রথমবার ভিসা বাতিলের পর জোকোর করা আপিলের প্রেক্ষিতে অজি আদালতের রায় এসেছিল অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পেতে কোনো বাধা নেই সার্বিয়ান তারকার। রায়ের পর তিনি টেনিস কোর্টে ফিরে অনুশীলনও করেছেন। বৃহস্পতিবার বিশ্বের বর্তমান এক নম্বরকে রেখেই আসরের ড্র সেরে নেয় ওপেন কর্তৃপক্ষ।
ড্রয়ের কয়েকঘণ্টা পেরোতেই উল্টে যায় পাশার দান। অস্ট্রেলিয়া সরকারের আইনজীবীরা আগেই জানিয়েছিলেন, দেশটির ইমিগ্রেশন মন্ত্রী অ্যালেক্স হকার চাইলে ‘নিজস্ব ক্ষমতাবলে’ ফের বাতিল করতে পারেন জোকোভিচের ভিসা। শুক্রবার সেটিই করে বসেছে অজি প্রশাসন।
করোনা ইস্যুতে শক্ত অবস্থানে থাকা অজি প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন আগে বলেছিলেন, ‘জোকোভিচ কোনো বিশেষ কেউ নন। প্রত্যেকের জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য।’
অস্ট্রেলিয়া সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানী বেলগ্রেডসহ সার্বিয়াজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় জোকোকে রাখা হোটেলের সামনেও। সার্বিয়ান সরকার দাবি করে, অস্ট্রেলিয়া জোকোভিচের সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ করছে।
পরে অস্ট্রেলিয়ার আদালতে করা আপিলে জোকোভিচের আইনজীবী জানান, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জোকোর পক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন নেয়া সম্ভব ছিল না। আদালত টেনিস তারকার পক্ষে রায় দেন। বলে দেন দেশটিতে থাকতে কোনো বাধা নেই। এরপর খুলতে থাকে মাঠে নামার দরজাও।
অনুশীলনে ফিরে জোকোভিচ যখন বলেন, এখন শুধু খেলায় মনোযোগের সময়, সেটির চব্বিশঘণ্টা পেরিয়ে অজি ইমিগ্রেশন মন্ত্রী অ্যালেক্স হকারের ‘নিজস্ব ক্ষমতাবল’ প্রয়োগে ফের ভিসা বাতিল করে দেন সার্বিয়ান তারকার। এরপর ফের আপিল করে অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার চূড়ান্ত নির্দেশ পেলেন ২০ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী তারকা।