দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকে যে কাজ করেছিলেন হিটলার সেটাই এখন করছেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। মূলতঃ তার নির্দেশেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন চলছে। সেই নিধনযজ্ঞে দেশবাসীর সহায়তা চেয়েছেন জেনারেল মিন।
সেনা অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে পাচঁ হাজার মানুষ। জীবন বাঁচাতে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে হাজার হাজার শিশু। ওই শিশুদের সামনে তাদের বাবা-মাকে হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গলের ভেতর দিয়ে মাইলের পর মাইল পাহাড়ি পথ হেঁটে তারা অনেকে আশ্রয় পেয়েছে বাংলাদেশে।
জেনারেল মিন অং হ্লাইনের নির্দেশে অনেক রোহিঙ্গাকে যেমন গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তেমনি অনেককে হত্যা করা হয়েছে জীবিত পুড়িয়ে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েও অনেক রোহিঙ্গাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এরকম হত্যাকাণ্ড এবং বাড়িঘরে আগুন ও লুটতরাজে সেনাবাহিনীর সঙ্গী হয়েছে কিছু ভিক্ষু এবং অস্ত্রধারী সরকারী গোষ্ঠি।
যারা কোনরকমে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশমুখি হয়েছে শেষ মুহূর্তেও তাদের মেরে ফেলতে মিয়ানমার সীমান্তে ল্যান্ড মাইন বসিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
এসবই ঘটেছে এবং ঘটছে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের নির্দেশে। হত্যাযজ্ঞকে পাঠ্যবইয়ে যোগ করার মতো জাতিগত নির্মূলের নিকৃষ্ট উদাহরণ বলেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা। রোহিঙ্গা নিধনের নেপথ্য থাকা সেনাবাহিনীর কমান্ডার মিন অং হ্লাইং-কে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বর্ণনা করছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। হিটলারের সঙ্গেও তুলনা করছেন অনেকে।
ওইসব গণমাধ্যম বলছে, মিয়ানমারের সেনাকমান্ডার মিন অং সেনাবাহিনীকে বিশ্বমানবতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে খারাপভাবে পরিচালনা করছেন। তার বাহিনী শুধু সম্প্রতি রোহিঙ্গা হামলার পেছনেই নয়, মিয়ানমারের অন্য জাতি-গোষ্ঠির উপরও হামলা চালিয়েছে বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শুধু রাখাইন রাজ্যেই বর্মী সেনাবাহিনী অত্যাচার চালায়নি, আরো দুটি রাজ্যে এরকম হামলা চালিয়ে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এসবই হয়েছে বর্মী সেনাপ্রধানের নির্দেশে।
অথচ এ বছর তিনি ভারত, জাপান এবং জামার্নির রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। জাতিগত উৎখাতের ব্যাপারে থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমঝোতায় পৌছেছেন। সবকিছু মিলিয়ে তিনি জাতিগত উৎখাতের যে মহাযজ্ঞ শুরু করেছেন তাতে তার মতো করে সফল হয়েছেন।
অস্ত্র ব্যবসার স্বার্থে অনেক দেশই তার জন্য লালগালিচা বিছিয়ে দিয়েছে। আর সেই অস্ত্র দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য রক্তের গালিচা বানিয়েছেন জেনারেল মিন অং হ্লাইং।