চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জীবন যুদ্ধে লড়াকু মুস্তাকিম

মুস্তাকিম খুব সাধারণ এক খেটে খাওয়া মানুষ যিনি পেশায় রিকশাচালক কিন্তু তার রয়েছে অসাধারণ জীবন যুদ্ধের গল্প। রাজধানীর ঢাকার বুকে রিকশা চালিয়ে নিজের লেখাপড়াসহ পরিবারে বাবা মা কেও নিজের উপার্জিত টাকায় ভরণ পোষণ করছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এভারগ্রীন বাংলাদেশ নামক একটি গ্রুপে বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সামি নামের এক ব্যক্তি মুস্তাকিমের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রমের কথা তুলে ধরেন। মুস্তাকিমের সঙ্গে ছবিও তুলেন তিনি।

সামি পোস্টে লিখেন রিকশাচালকের নাম মুস্তাকিম। রিকশা চালিয়ে লেখাপড়া করে যাচ্ছেন। সংসারও চালাচ্ছেন।এই ঢাকার শহরে অনেক মুস্তাকিমই আছে যাদের কথা আমরা জানি না।

ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য ভালো কোনো পোশাক নেই তার। মুস্তাকিমের একটি চাকরির জন্য ফেসবুক ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। আরো বলেন কেউ ইন্টারভিউয়ের জন্য মুস্তাকিমকে ডাকলে তিনি নিজে মুস্তাকিমকে ইন্টারভিউয়ের জন্য পোশাক কিনে দিবেন।

মোবাইলে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন মুস্তাকিম।

মুস্তাকিম চ্যানেল আই অনলাইনকে জানায়, তিনি মাদ্রাসা লাইনে লেখাপড়া করেন। রিকশা চালিয়েই দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার দরগা পাড়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলীম পাস করেন। পরে ফাজিল পাস করেন।

২০০৯ সালে প্রথম ঢাকায় আসেন মুস্তাকিম। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মুস্তাকিম সবার ছোট। অভাবের সংসারের হাল ধরতেই সে ঢাকায় আসে।

মুস্তাকিম আরো বলেন, বড় ভাইয়ের ঘরে দুই সন্তান আর ছোট বোনের যে পরিবারে বিয়ে হয়েছে সে পরিবার স্বচ্ছল না তাই নিজের বাবা মাকে তিনি দেখেন। তার রিকশা চালানোর টাকা দিয়েই বাবা মা আর নিজের লেখাপড়ার খরচ চালান।

রোদেপুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চালিয়ে পড়াশুনা অনেক কষ্টের তারপরও থেমে থাকেননি মুস্তাকিম।

চ্যানেল আই অনলাইনকে মুস্তাকিম বলেন, পরীক্ষার এক মাস বা দুমাস আগে দিনাজপুর চলে যান মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করেন, পরীক্ষা দেন। তারপর আবার ফিরে এসে ঢাকায় রিকশা চালান।

পড়াশুনার প্রতি অদম্য ইচ্ছাশক্তি মুস্তাকিমের। বাধা বিপত্তি ভেঙ্গে লেখাপড়ার শেষ করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মুস্তাকিম।

চ্যানেল আই অনলাইনকে মুস্তাকিম আরো বলেন, এখন চান কামিল ডিগ্রী নিতে। কিন্তু রিকশা চালিয়ে পরিবারের ভরণ পোষণ করে তার উপার্জনের টাকা আর অবশিষ্ট থাকে না। একটি চাকরি পেলে তার কষ্ট অনেকটা কমে আসবে।

ফেসবুকের এভারগ্রীন বাংলাদেশ গ্রুপে পোস্টটির পর কমেন্টে সবাই মোস্তাকিমের প্রতি শুভ কামনা জানিয়েছেন। অনেকে মোস্তাকিমের চাকরির ব্যাপারেও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। সঙ্গে লেখাটি পোস্ট করার জন্য সামিকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন।