ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া আলোচিত ঠিকাদার ও যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জি কে শামীমকে অস্ত্র মামলায় দেয়া জামিন প্রত্যাহার করলেন হাইকোর্ট।
আলোচিত জি কে শামীমের জামিনের সংবাদ শনিবার গণমাধ্যমে প্রকাশের একদিন পর রোববার সকালে শামীমের জামিন সংক্রান্ত বিষয়টি শুনানির জন্য একটি সম্পূরক কার্যতালিকা প্রকাশ করা হয়।
এরপর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি এস এম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান বলেন: ‘মাই লর্ড এই মামলায় জামিন আবেদনকারীর নাম লেখা ছিল এস এম গোলাম কিবরিয়া। কিন্তু আদালতের ওই দিনের কার্যতালিকায় নাম শুধু এস এম গোলাম।’
এরপর জামিনের পক্ষের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন মেহেদী আদালতকে বলেন: জামিন আদেশের দিন ওই সময় কোর্টে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান ছিলেনই না।
আজ দু’পক্ষের এসব কথা শুনে হাইকোর্ট বলেন: ‘এটার বিষয়ে হয়ত নামে বিভ্রান্তি হয়েছে। আমাদের হয়ত বুঝতে সেদিন ভুল হয়েছে। তাই আমরা জামিনের অর্ডারটি রিকল (প্রত্যাহার) করছি।
এ সময় আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে আরো ছিলেন আইনজীবী শওকত ওসমান।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ত্র ও মাদক মামলায় হাইকোর্ট থেকে জি কে শামীমের জামিন নেয়ার বিষয়টি গতকাল বিকেলে জানাজানি হয়। উচ্চ আদালত থেকে দুই মামলায় নেয়া জামিনের সত্যতা শনিবার বিকেলে নিশ্চিত করেন জি কে শামীমের আইনজীবী শওকত ওসমান।
এই আইনজীবী চ্যানেল আই অনলাইন-কে বলেন: ‘মাদক মামলায় বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি ভিস্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি জামিন পান জি কে শামীম। ৬ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র মামলায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি এস এম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে জামিন পান তিনি। তবে মুক্তি পেতে হলে আরো দুটি মামলায় জি কে শামীমীকে জামিন পেতে হবে।’
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নী জেনারেল এফআর খান শনিবার বিকেলে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ‘আমি এই জামিনের বিষয়ে কিছুই জানেন না।’
এর আগে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় র্যাব। তখন ওই ভবন থেকে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে ২০০ কোটি টাকার এফডিআর, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয়। সে সময় শামীম ও তার সাতজন দেহরক্ষীও গ্রেপ্তার হন।
পরের দিন তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ৩টি মামলা দায়ের করে র্যাব। এর মধ্যে অস্ত্র ও মুদ্রা পাচার মামলায় সবাইকে আসামি করা হলেও অন্য মামলায় শুধু শামীমকে আসামি দেখানো হয়। এঘটনার প্রায় এক মাস পর গত ২১ অক্টোবর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অস্ত্র মামলাটিতে অভিযোগ গঠন করে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেছে ঢাকার বিচারিক আদালত।