ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর টেস্টেও চারদিন ধরে মধুর একটা স্বপ্নের সঙ্গে ঘর করছিল জিম্বাবুয়ে। শেষদিন ডিকভেলা (৮১) ও গুনারত্নে (অপরাজিত ৮০) সেই স্বপ্ন ভেঙে খানখান করে দিয়েছেন। লঙ্কানরা জিতে গেছে চার উইকেটে!
শ্রীলঙ্কাকে জিততে হলে করতো হতো ৩৮৮ রান। টেস্টের ১৪০ বছরের ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে মাত্র চারটি। এর কোনোটিই উপমহাদেশে নয়।
চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করার রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের। অস্ট্রেলিয়ার ৪১৭ রান তাড়া করে জিতেছিল দলটি। ওই অস্ট্রেলিয়ার ৪১৩ রান তাড়া করে জেতার নজির আছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ইংল্যান্ডের ৪০৩ একবার টপকে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। উইন্ডিজের ৪০২ টপকে জয়ের নজির আছে ভারতের। এবার ৩৮৮ টপকে গেল শ্রীলঙ্কা।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৫২ রান তাড়া করে জেতা ছাড়াও আর মাত্র একবারই তিনশর বেশি লক্ষ্য ছুঁতে পেরেছে লঙ্কানরা। সেটি এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। এই কলম্বোতেই সেবার ছিল ৩২৬ রানের লক্ষ্য। আর চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৯১ রান করেও পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল স্বাগতিকদের। এবার সবকিছু ছাপিয়ে জয় নিয়ে মাঠে ছেড়েছে দলটি।
জিম্বাবুয়ের ছুঁড়ে দেয়া লক্ষ্যটা টপকানোর আশা নিয়েই চতুর্থ দিন শেষ করে শ্রীলঙ্কা। ৩ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিল ১৭০ রান। শেষদিন আর তিন উইকেট হারাতে জয়ের বন্দরে ভিড়ে লঙ্কান তরি। গুনারত্নের সঙ্গে দিলরুয়ান পেরেরা (২৯) রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করেন।
প্রথম ইনিংসের ১০ রানের লিডের সঙ্গে ৩৭৭ রান যোগ করে সোমবার দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে।
জবাব দিতে নেমে ভাল শুরুই করেন লঙ্কান দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও দিমুথ করুনারত্নে। জুটিতে ৫৮ তোলার পর উইলিয়ামসের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন থারাঙ্গা (২৭)। দ্বিতীয় উইকেটে আরেকটি অর্ধশত রানের জুটি পায় স্বাগতিকরা। তবে জুটিতে হাফসেঞ্চুরি করতে পারলেও এক রানের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন করুনারত্নে। ৪৯ রান করে গ্রায়েম ক্রেমারের বলে পিটার মুরের তালুবন্দি হন তিনি।
দুটি ভাল জুটির পর দলের জন্য তেমন কিছু করতে পারেননি অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। একটু চড়া ব্যাটে খেলতে গিয়ে মাত্র ১৫ রানেই ফেরেন তিনি।
তিন উইকেট হারালেও শ্রীলঙ্কাকে কক্ষপথে রাখেন কুশাল মেন্ডিস ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। কুশাল ৬০ এবং ম্যাথুজ ছিলেন অপরাজিত ১৭ রানে। কুশাল পরে আর ৬ রান যোগ করেন। ম্যাথুজ করতে পারেন ২৫।
এর আগে চতুর্থ দিনের শুরুতেই নিজের প্রথম টেস্ট শতক তুলে নেন সিকান্দার রাজা। আগের দিনে ৯৭ রানে অপরাজিত রাজা সোমবার ইনিংস টেনে নেন ১২৭ রান পর্যন্ত। সঙ্গে ম্যালকম ওয়ালারের ৬৮ এবং অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমারের ৪৮ রানে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ে পায় ৩৭৭ রানের বিশাল সংগ্রহ। শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই কাজে আসলে না।