রাজধানীর জিগাতলায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একদল যুবকের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার পর পরিস্থিতি এখন থমথমে। উভয়পক্ষ এখনও নিজ নিজ অবস্থানে থাকলেও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সেখানে অবস্থান করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ধানমণ্ডি ৩/এ আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হলে সেখানে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে ইট ছোড়া শুরু করে। জবাবে হামলাকারীরাও ইট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা কিছু দূর পিছু হটে বিজিবি গেটের কাছে আসলে কর্তব্যরত প্রায় শতাধিক বিজিবি সদস্য এগিয়ে এসে হামলাকারী যুবকদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের ১০ জনের মত আহত খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে তিনজন কার্ডধারী শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের সকলেই জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
আন্দোলনরতদের শিক্ষার্থী বলে মনে হয়নি বলে চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হওয়া উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ওই পক্ষ থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
পুলিশের পক্ষ থেকে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা তিন রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়েছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে লাঠিধারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার খবর শুনে দুই দলকে নিবৃত্ত করতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি সবাইকে লাঠি-সোটা ফেলে সংযত থাকার আহ্বান জানান।
বর্তমানে নেতাকর্মীরা ধানমণ্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন সিটি কলেজের দিকে। পুলিশ দুই দলের মাঝখানে অবস্থান করছেন।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাকায় পিষ্ট হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া ও রাজীব।
ওই সময় কুর্মিটোলা ফ্লাইওভারের কাছে শিক্ষার্থীরা বাসের জন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলে। দুটি বাসের রেষারেষিতে একটি বাস শিক্ষার্থীদের উপর উঠে যায়। ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হয়।
এ ঘটনার পর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে ধীরে ধীরে রাজপথে নামে।