ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশের আরও ৬টি পণ্য। পণ্যগুলো হলো- ঢাকাই মসলিন, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, নেত্রকোনার বিজয়পুরের সাদা মাটি, দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও বাংলাদেশি কালিজিরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে জিআই সনদপত্র তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মেধাসম্পদ’ শীর্ষক সেমিনার এবং ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ সনদ দেয়া হয়।
এই ৬টি সহ এখন পর্যন্ত মোট ৯টি পণ্য বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য (জিআই) হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেল। এর আগে ইলিশ, জামদানি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম- এই ৩টি পণ্যকে সনদ দেয়া হয়েছিল।
কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়া ও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। সেই হিসেবে এই ৯ পণ্য বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেল।
অনুষ্ঠানে ঢাকাই মসলিনের জন্য বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, রংপুরের শতরঞ্জির জন্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান, রাজশাহী সিল্কের জন্য বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আবদুল হাকিম, বিজয়পুরের সাদামাটির জন্য নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান এবং দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও কালিজিরা চালের জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউশনের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের হাতে সনদপত্র তুলে দেয়া হয়।
একই অনুষ্ঠানে ‘পেটেন্ট’ এর জন্য বিজয় ডিজিটালের মোস্তফা জাব্বার ও হিসাব লিমিটেডকে সনদ দেয়া হয়। এছাড়া ‘ডিজাইন’ এর জন্য বিডি ফুড লিমিটেড, জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজকে সনদ দেয়া হয়।
‘ট্রেডমার্কস’ হিসেবে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, মোহনা টেলিভিশন লিমিটেড, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিডি এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে সনদ দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, ডিজাইন ও নির্দেশনা দিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি। কোভিডকালীন সময় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) রেজিস্ট্রার আবদুস সাত্তার বলেন, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ৬ হাজার ২১টি পেটেন্ট সনদ, ১৮ হাজার ৪৯৮টি ডিজাইন সনদ এবং ৬২ হাজার ৬০৯টি ট্রেডমার্কস নিবন্ধন সনদ দেয়া হয়েছে।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার প্রমুখ।