‘ভুল আসামি’ হয়ে প্রায় ৩ বছর কারাগারে থাকা পাটকল শ্রমিক জাহালমের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে হাইকোর্টের রায় বুধবার।
জাহালমের ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন। সে ধারাবাহিতায় বিষয়টি রায়ের জন্য আজকের কার্যতালিকায় আসে। এরপর আজ হাইকোর্ট এবিষয়ে উভয় পক্ষের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শুনে রায়ের জন্য বুধবার দুপুর ২ টায় সময় নির্ধারণ করেন।
আজ আদালতে সোনালী ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন। ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আনিসুল হাসান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাসার।
একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লোকটির বয়স ৩০-৩২ বছরের বেশি না। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ বিচারকের উদ্দেশে তাকে বারবার বলতে দেখা যায়, ‘স্যার, আমি জাহালম। আমি আবু সালেক না, আমি নির্দোষ।
আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ২৬টি মামলা হয়। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন জাহালম। যিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক। এমন ঘটনার তদন্ত করে দুদক বলে, ‘জাহালম নিরপরাধ।’ আর পরবর্তীতে এবিষয়ে একই মত দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।’’
পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি গত বছরের ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী (বর্তমানে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল) অমিত দাশগুপ্ত। এরপর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জাহালমকে ওই দিনই মুক্তির নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন। হাইকোর্টের ওই আদেশের কয়েক ঘন্টা পরই কারাগার থেকে মুক্তি পান জাহালম। পরবর্তীতে জাহালমের ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।