জার্মানিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকারের দেওয়া নানা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। সেই বিক্ষোভ সমাবেশ চলার সময় অন্তত ৩’শ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রায় ৩৮ হাজার মানুষের ওই ‘শান্তিপূর্ণ’ বিক্ষোভে ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত একটি অংশ পাথর ও বোতল নিক্ষেপ করে। সে সময় প্রায় ২’শ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইউরোপের অন্যান্য শহরেও কিছু বিক্ষোভকারী করোনাভাইরাসকে ‘গুজব’ উল্লেখ করে একই ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
এর মধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে বিধিনিষেধ এবং ৫-জিসহ আরো বেশ কিছু বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে জড়ো হয়। তারা ‘মাস্কগুলো ধাঁধা’ ‘নতুন সাধারণ = নতুন ফ্যাসিবাদ’ লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে।
প্যারিস, ভিয়েনা এবং জুরিখেও একই রকম প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়।
জার্মানির ব্র্যান্ডেনবুর্গ গেটের কাছে পুলিশ একটি দলকে নিরাপত্তার বিধিনিষেধ মানার জন্য ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেয়। তখন তারা পাথর ও বোতল নিক্ষেপ করলে প্রায় ২’শ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এক টুইট বার্তায় পুলিশ জানায়, দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের অন্য কোনও বিকল্প ছিলো না। এখন অবধি নেওয়া সমস্ত পদক্ষেপ শর্তাদি মেনে হয়নি।
বিক্ষোভকারীরা এক জায়গায় ভিড় করে একত্রে বসেছিলো। আরেক জায়গায় ৩০ হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে জড়ো হয়।
যদিও জার্মানিতে তেমন সংক্রমণের ঢেউ দেখেনি কিন্তু সেখানে সংক্রমণ বাড়ছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ, বিচ্ছিন্নকরণ এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ সফল জার্মানি। ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের মৃত্যুহার কমাতেও সফল তারা।
এপ্রিলের শুরুতে শারীরিক দূরত্ব পদক্ষেপ শিথিল করা শুরু করে জার্মানি। কিন্তু নতুন সংক্রমণগুলো ট্র্যাকিং করতে থাকে। আগস্টে সেই সংক্রমণ আরও বেড়ে যায়।
বৃহস্পতিবার দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল মাস্ক না পরলে ন্যূনতম ৫০ ইউরো জরিমানার বিধান প্রবর্তন করেন।
এছাড়াও বড় বড় জনসমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা পরের বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
মেরকেল বলেন, আমাদের এই ভাইরাস নিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে হবে। এটি এখনও মারাত্মক। শীতে তা আরও চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
জার্মানিতে ২ লাখ ৪২ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আর প্রাণ হারিয়েছে ৯,২৯৭ জন। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মতে যেটা রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স এবং ইতালির সংখ্যার তুলনায় যথেষ্ট কম।