জাবি প্রতিনিধি: সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জাবির দুই শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মেহেদী হাসান আরাফাতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং পরিবারের এক জন সদস্যকে যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা প্রত্যাহার করে আগামী ৮ জুন (বৃহস্পতিবার) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সকল প্রকার ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে ৯ জুলাই (রোববার) ক্যাম্পাস খোলার পর থেকে।
উপাচার্য বলেন, ‘গত ২৮ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীষ্মকালীন, রমজান ও ঈদ-উল-ফিতরের ৪১ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। অকস্মাৎ বন্ধ ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা বাড়িতে গিয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে ভোগান্তিতে না পরে তাই ছুটি শেষে ৯ জুলাই থেকে ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
ছুটির মধ্যেই বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের চলমান পরীক্ষার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পর থেকে বিভাগীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুনঃনির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী পরীক্ষাসমূহ অনুষ্ঠিত হবে।’
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মামলার পরবর্তী করণীয় বিষয়ে আমরা আইন উপদেষ্টাদের পরামর্শ নিব। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
অপরদিকে হলসমূহ খুলে দেয়ার পূর্বে নিহত নাজমুল হাসান রানা ও মেহেদী হাসান আরাফাতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই পরিবারকে আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ড থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। এছাড়া অন্য একটি উৎস থেকে আরও পাঁচ লাখের মতো টাকা আমরা সংগ্রহ করে দিচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবি প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিএন্ডবি থেকে বিশমাইল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও স্পীড ব্রেকার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবেদন করেছে। শিগগিরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরে লিখিত দাবি নিয়ে প্রতিনিধি পাঠানো হবে।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চ।
সংগঠনের আহ্বায়ক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের মাথার উপর মামলার খড়গ ঝুলতে দিতে পারি না। মামলা প্রত্যাহার করা না পর্যন্ত আমাদের দাবি অব্যাহত রাখবো।’
সংবাদ সম্মেলনে তাদের দেয়া ৮ দফা দাবির মধ্যে মামলা প্রত্যাহার সহ অপুরণীয় আরো ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রোববার সকাল ১১টায় মানববন্ধন করার ঘোষণা দেন তারা।