জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য সিনেট অধিবেশনে ২৫৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৩ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের মাত্র ১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
অন্যদিকে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যা মূল বাজেটের ৩২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ৩৮তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে বাজেট পেশ করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক।
পরে সিনেট সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে ২৫৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বাজেট পাশ হয়। প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নূরুল আলমসহ সিনেট, সিন্ডিকেট, নির্বাচিত রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর পাশকৃত নতুন বাজেটে অবসরকালীন সুবিধা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। প্রশাসনিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এবং বিবিধ ব্যয় বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
এদিকে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর মধ্যে ছাত্রবৃত্তি ও ফেলোশিপে বরাদ্দ ০.০৬ শতাংশ কমিয়ে ২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা করা হয়েছে। পরীক্ষার খরচ বাবদ বরাদ্দ ০.২৬ শতাংশ কমিয়ে দাড়িয়েছে ১৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
২৫৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকার এ বাজেট বাস্তবায়নে আয়ের উৎস হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২৩৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার অনুদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও পেশ করা হয়। সংশোধিত বাজেটের আকার ২৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল ঘাটতির পরিমাণ দাড়াবে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সর্বমোট ক্রমপুঞ্জীভূত বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাড়াবে ৬৪ কোটি ৮৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
বাজেট বিশ্লেষকরা বলছেন, উপাচার্যের যানবাহনের জ্বালানি বাবদ ব্যয় এক লাখ টাকা বৃদ্ধি করে ৬ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতে তেমন বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। বাজেট বাড়েনি শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খাতেও। মেডিকেল সেন্টার (ডাক্তার ও কর্মচারীদের বেতনসহ ওষুধ অন্যান্য আনুষঙ্গিক) বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ কোটি ২৬ লাখ। টাকা যা গত বছর ছিল ৩ কোটি ১২ লাখ।
এছাড়া বিভিন্ন হলে বরাদ্দের মধ্যেও রয়েছে অসামঞ্জস্য। আবার গবেষণা খাতকে একেবারেই উপেক্ষিত রাখা হয়েছে। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান গবেষণাগার ‘ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র’ জন্য তেমন বরাদ্দ রাখা হয়নি।
দুই বছর পর অনুষ্ঠিত ৩৮তম বার্ষিক এ অধিবেশনের কার্যসূচিতে বাজেট উপস্থাপন ছাড়াও সর্বমোট ৮টি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এগুলো হলো- উপাচার্যের ভাষণ, ৩৬তম সিনেট অধিবেশনের কার্যবিবরণী নিশ্চিতকরণ, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রেকারিং বাজেট কার্যোত্তর অনুমোদন, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের রেকারিং বাজেট অনুমোদন বিবেচনা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খসড়া প্রতিবেদন অনুমোদন বিবেচনা, ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের খসড়া সংবিধি বিবেচনা, ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিংয়ের নাম পরিবর্তন ও বিবিধ।