চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জাবিতে সাংবাদিক পিটিয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ শিক্ষার্থী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে ছিনতাইয়ের সময় বাধা দেয়ায় সেখানে কর্মরত চ্যানেল আই অনলাইন প্রতিনিধি মাহমুদুল হক সোহাগকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, প্রাথমিক তদন্ত শেষে উপাচার্য নিজ ক্ষমতাবলে তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন। বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করতে পারবেন বলেও তিনি জানান।

বহিষ্কৃতরা হলেন, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪২তম আবর্তন ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র নেজাম উদ্দিন নিলয়, বাংলা বিভাগের ৪৫তম আবর্তন ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র শুভাশিষ ঘোষ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আসন্ন হল কমিটিতে নেজামউদ্দিন নিলয় সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।

লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৭ তম আবর্তনের ইয়া রাফিউ শিকদার, মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ সোহেল রানা, আমিনুল ইসলাম ও মোঃ ইফতেখার উদ্দিন। এরা সকলেই শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষাথী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চলের অনুসারী ছাত্রলীগকর্মী।

প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদেরকে সাময়িক বহিষ্কারের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হাতে পেলে সেই অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের শাস্তি প্রদান করা হবে।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুল সংলগ্ন এলাকায় ঘুরতে আসেন দুই বহিরাগত। সে সময় সাংবাদিক মাহমুদুল হক সোহাগ ও কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী সুইমিংপুলে গিয়ে বহিরাগত দুই জনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর এবং তাদের কাছে থাকা মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালান।

এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে মাহমুদুল হক শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা সবাই লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৭ ব্যাচের ছাত্র এবং শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাত্রলীগ কর্মী বলে পরিচয় দেন।

এ সময় মাহমুদুল হক তার পরিচয় দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাত থেকে বহিরাগত দুইজনকে রক্ষা করেন এবং তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন।

পরে বহিরাগত ওই দুইজন শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সামনে আসলে পুনরায় তাদের আটক করে লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করতে থাকে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এতে বাধা দিলে ছাত্রলীগ কর্মী রাফিউল সিকদার আপন ফোন করে ছাত্রলীগ নেতা নেজামউদ্দিন নিলয়কে ডেকে আনেন।

এরপর নিলয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তার মদদে ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মাহমুদুল হককে বেধড়ক কিল-ঘুষি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে পাশের ঝোপে ফেলে দেয়। মাহমুদুল হককে রক্ষা করতে তার বিভাগের একজন ছাত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও বেধড়ক মারধর ও শারীরিক লাঞ্ছনা করেন।

খবর পেয়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় তারা প্রক্টর ও উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন।