জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শিক্ষক লাঞ্চনার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ৪২ শিক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছে আদালত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির হলে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান সবার জামিন মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের এক আইনজীবী সানাউল ইসলাম টিপু জানান, মামলায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হামলা ও ভাঙচুরের পাশাপাশি গুরুতর জখম ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগও আনা হয়েছে।
শনিবার রাতে উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরত অবস্থায় তাদেরকে আটক করে আশুলিয়া থানার পুলিশ। শনিবার রাত ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে এক জরুরী সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে এ তাদেরকে পুলিশে সোপর্দসহ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই জাবি শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিক, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।
পরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও উপাচার্য না আসলে প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসভবনের জানালার কাচ, সিসি ক্যামেরা ও বাতি ভাঙচুর করে। বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে তারা।
এসময় উপস্থিত শিক্ষকদের সাথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাধিকবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সিন্ডিকেট সভা শেষে রাত ১২টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতর থেকে প্রায় ৪২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে আশুলিয়া থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা জানান, শিক্ষকদের লাঞ্ছনা, ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।