অবশেষে গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে অর্থ সহায়তার ঘোষণা এসেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের দেশগুলোর জন্য ৪শ’ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। আর শিল্পোন্নত ১৩ দেশ ২শ’ ৩২ মিলিয়ন ডলার এডাপটেশন বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের দ্বিতীয় সপ্তাহে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে একটি সারাংশ প্রকাশ হয়েছে। এতে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে রোডম্যাপ নেই। সাইড ইভেন্টে জলবায়ু তহবিল গঠনে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ উদ্যোগ ও পরিবেশ বান্ধব কৃষি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ২০০৯ সালে দেশে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়ে সরকার দেশ পরিচালনা শুরু করে গত ১২ বছরে তা বেড়ে বর্তমানে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। এর ফলে দেশের উন্নয়ন, মানুষের মাথাপিছু আয় ও গড় আয়ু বেড়েছে, জীবনমানের উন্নতি হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়ায় মানুষের আয়ও বেড়েছে।’
শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, এখন মাথাপিছু জিডিপি ২ হাজার ২৫০ ডলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করোনাকালে জিডিপিসহ দেশের মানুষের জীবনরক্ষা ও জীবিকার চাকা সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজই মূলত: অর্থনীতির সকল সূচকে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি তথা সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০% নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্য পূরণে উন্নয়ন সহযোগীরা আধুনিক প্রযুক্তি ও অর্থ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
সম্মেলনের শেষ ভাগে এসে কপ-২৬ সফল করতে উদ্যোগী হয়েছে আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য। অভিযোজন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে উন্নত দেশগুলোকে দ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু এ প্রসঙ্গে বলেন: ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্সে একটি অগ্রগতি হয়েছে। ২৩২ মিলিয়ন ডলার ১৩টি ধনী দেশ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অ্যাডপটেশনের জন্য দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি ব্রিটেন প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঝুঁকিতে থাকা এশিয় দেশগুলোর জন্য দেওয়ার কথা বলেছে। আমরা আশা করছি বাংলাদেশও এখান থেকে একটি ফান্ড পাবে। আমি আশা করি আরও ফান্ড আসবে। যে ফান্ড আসছে তা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্লাইমেট চেঞ্জের প্রভাব মোকাবেলা করা সম্ভব না। একমাত্র ধনী দেশগুলোই পারে এ ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে।
মন্ত্রীপর্যায়ের দর-কষাকষিতে অভিযোজন কর্মপরিকল্পনা, ক্ষতিপূরণ ও প্রযুক্তি বিনিময় নিয়ে শেষ মুহূর্তেও আলোচনা চলছে।
প্রযুক্তি বিনিময়ে ফান্ড দেওয়া বিষয়ে ঐক্যমতে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানীসহ বেশ কয়েকটি শিল্পোন্নত দেশ। জাতিসংঘের জলবায়ু প্রযুক্তি সেন্টার অ্যান্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ওই অর্থ ছাড় ও প্রযুক্তি বিনিময় করা হবে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে।