গত মঙ্গলবার কেনটাকির গভর্নর ম্যাট বেভিন তার নয় শিশুর কথা বলেছেন যাদের কারোরই জলবসন্তের টিকা দেয়া নেই। বরং এই রোগ থেকে বাঁচাতে তিনি তাদের আক্রান্তদের সংস্পর্শে এনেছেন যেন শিশুদের সহ্যক্ষমতা বৃদ্ধি যায়।
স্থানীয় রেডিও স্টেশন ডব্লিউকেসিটির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বেভিন বলেন, তার সব শিশুরই জীবনে একবার জলবসন্ত হয়েছে। এক প্রতিবেশির শরীরে এই রোগ ছিলো দেখেই তারা আক্রান্ত হয়েছে।
১৯৯৫ সালে জরবসন্তের টিকা সহজলভ্য হওয়ার আগে বাবা-মা ‘জলবসন্ত পার্টি’ করতো, যেমনটা বেভিন বর্ণনা করেছেন। এই সব আয়োজনে সুস্থ শিশুদের জলবসন্তে আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে একই ঘরে রাখা হতো এই প্রত্যাশায় যে তারা তাহলে রোগের সঙ্গে পরিচিত হবে এবং সেটা অতিক্রম করার শক্তি অর্জন করবে।
এরপরে বেশ কয়েক বছর আর এই সব ছিলো না। তবে সম্প্রতি আবার অনেকে জলবসন্ত পার্টির আয়োজন করছে। যদিও পক্স পার্টি এই ভিত্তিতে আয়োজন করা হয় যে, যত বেশি মানুষ জলবসন্তে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসবে তত কম আক্রান্ত হবে, তবুও সেটা তাদের নিরাপদ করে না।
সেখানকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন(সিডিসি) থেকে জানানো হয়, আপনার সন্তানের লক্ষণগুলো কতটা ভয়াবহ হবে তা আগে থেকে কখনোই বলা যায় না। সুতরাং নিজের সুস্থ শিশুকে কখনোই আক্রান্তদের সামনে এনে ঝুঁকির মুখে ফেলা ঠিক নয়।
এতে অনেক সুস্থ শিশুরও মৃত্যুঝুঁকি থাকে। একটি মানুষ জলবসন্তে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে কতটা ক্ষতির মুখোমুখি হবে তা অনুমান করা অসম্ভব। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. নাতাশা বার্গার্ট বলেন, যেহেতু আগে থেকে অনুমান করার কোনো পথ নেই তাই এটাকে জুয়াও বলা যায়। কিছু শিশু অল্প জলবসন্তে আক্রান্ত হবে আর কিছু মৃত্যুর মুখে পড়বে। কেউই জানিনা, তাই সবাইকে টিকা দেওয়ারই চেষ্টা করি আমরা।
সিডিসি জানিয়েছে, জলবসন্তে অল্পস্বল্প আক্রান্ত হলে মাথাব্যথা, জ্বর, ক্ষুধামন্দা, ক্লান্তিতে আক্রান্ত হয়। সঙ্গে শরীরে লালচে দানা থাকে। তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, মস্তিস্কে প্রদাহ, পচনের মতো সমস্যা দেখা দিয়ে কেউ মৃত্যুবরণও করতে পারে।
তবে প্রাকৃতিক উপায়ে এই রোগ গ্রহণ করলে সহ্যক্ষমতা বাড়বে সেই ভাবনা ভুল। তাহলে আমরা কেন টিকা তৈরি করেছি? যেন কোনো শিশু প্রাণ না হারায়। সেটাই সেই রোগের জীবাণুগুলোকে মেরে ফেলবে বা দুর্বল করে দিবে- এমনটাই বলেন বার্গার্ট।