রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সাড়ে ৫ লাখ টন চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার।
অর্থমন্ত্রী বলেন: আজ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য তিনটি এবং ক্রয়-সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য দুটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি এবং বিদ্যুৎ বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত দুটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১৯৯ কোটি ২৬ লাখ ৭৬ হাজার ৮৯৯ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থই জিওবি হতে ব্যয় হবে।
চাল আমদানিতে সময় কমানোর পদক্ষেপ কেন নেয়া হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন: এ বছর খাদ্যশস্য উৎপাদন কম হয়েছে। চালও উৎপাদন কম হয়েছে। গত বছর বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি আমরা। তবে খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ সবসময় এটা দাবি করি।
‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি কোনো আগাম বন্যা না হয়, আর যদি কোনো ঝড়ঝঞ্জার মধ্যে না পড়ি তাহলে আমরা স্বাভাবিক থাকব। আমদানি করারও প্রয়োজন হবে না। আজকে যে প্রস্তাবটি এসেছে সেটার দাম নির্ধারণ করা হবে টেন্ডার করার পর। আজ শুধু আমরা সময় দিয়েছি, এতদিনের মধ্যে আমদানি করতে হবে’, জানান অর্থমন্ত্রী।
মুস্তফা কামাল বলেন: খাদ্য মন্ত্রণালয়কে বলে দেয়া হয়েছে, তারা লক্ষ্য রাখবেন চাল আমদানি যেন আবার বেশি করা না হয়। কারণ বেশি আমদানি হলে বাজারের ওপর প্রভাব পড়বে। এ পুরো বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয় দেখাশোনা করবে। যাতে করে তাদের যেটুকু ঘাটতি আছে বলে তারা মনে করছে সেটুকু আমদানি করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার বলেন: খাদ্য অধিদপ্তরকে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সাড়ে ৫ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্যে দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১০ দিন করার প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাস্তবায়নকারি সংস্থা হচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সাড়ে পাঁচ লাখ টন খাদ্যশস্য টেন্ডারের মাধ্যমে না কি জিটুজির আওতায় আমদানি করা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: এটা অবশ্যই উদ্যোগী মন্ত্রণালয় (খাদ্য মন্ত্রণালয়) সরকারের নিয়ম নীতি অনুযায়ী এ বিষয়ে প্রক্রিয়া করণ করবে।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে নীতিগত অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হলো: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ‘বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠার জন্য বেজা ও বেপজার মধ্যে স্বাক্ষরিতব্য ডেভেলপমেন্ট এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাস্তবায়নকারি সংস্থা বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।
এ বিষয়ে ড. শাহিদা আক্তার বলেন: বেজা ও বেপজা দুটিই সরকারি সংস্থা। তাদের মধ্যে একটা ডেভেলপমেন্ট এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর হয়েছে। বেজা বেপজাকে জমি দেবে। সেটার ওপর তারা কাজ করবে।
এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণারয়ের অধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষে আন্তর্জাতিকমানের বেসরকারি অপারেটর নিয়োগের লক্ষ্যে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে ‘ইক্যুইপ, অপারেট অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স অব পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল অন পিপিপি মডেল’ প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।