আইন করে জরিমানা আদায় মুখ্য উদ্দেশ্য নয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন: নতুন সড়ক পরিবহন আইনের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই প্রধান উদ্দেশ্য। সরকার চায় সবাই আইন মেনে চলুক।
রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দৈনিক সমকাল কার্যালয়ে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
নতুন সড়ক পরিবহন আইনে অধিক জরিমানার প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সমালোচনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: জরিমানা করার উদ্দেশ্য আমাদের নয়, সরকার চায় সকলেই আইন মেনে চলুক। কাজেই আইন করে জরিমানা করা মুখ্য বিষয় নয়, আমাদের উদ্দেশ্য সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
নতুন আইনের বিষয়ে পরিবহন সেক্টর সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে সমালোচনা আসলেও সর্বত্র আইন মানার প্রস্তুতি চলছে। গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষায় কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ-তে এখন প্রচণ্ড ভিড়। সকলের মধ্যেই আইন মানার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন: সড়ক দুর্ঘটনা পৃথিবীর সর্বত্রই হয়, কিন্তু আমরা দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই। আমরা চাই, কোন চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাবেন না, সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি থাকবে না, লাইসেন্স ছাড়া কোন চালক গাড়ি চালাবেন না এবং সকলেই ট্রাফিক আইন মেনে চলবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন: সরকার সবক্ষেত্রেই সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। নতুন সড়ক আইন নিয়ে যতোই প্রশ্ন উঠে আসুক, আমরা চাই পরিবহন সেক্টরের সংশ্লিষ্টরা এই আইন মেনে চলবেন। আজকে তারা নানা কথা বলছেন, কালকেই তারা সেটি মেনে চলবেন। আমরা সেই অপেক্ষায় থাকবো।
বৈঠকে পরিবহন সেক্টরের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন: নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংসদে পাস হয়ে গেছে, এটি নিয়ে এখন কিছুই করার নেই। কিছু করতে হলে আবার সংসদে যেতে হবে। আইনটি করার সময় আমরা বহু দেশের সড়ক আইনের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি।
তিনি বলেন: চালক ইচ্ছা করে যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটান তাহলে ৩০২ ধারায় মামলা হবে। জামিনের এখতিয়ার আমাদের নেই, এটি আদালতে বিচারক দেখবেন। আমরা শুধু আইন করে দিয়েছি। চালকের ভূমিকা পর্যালোচনা করে বিচারক জামিন দেওয়ার বিষয়টি দেখবেন।
‘তবে কোনকিছুই অপরিবর্তনযোগ্য নয়। আইনে কোন অসঙ্গতি থাকলে আমরা পরীক্ষা করে দেখব। পরিবর্তনের বিষয়টি যদি যুক্তিসঙ্গত মনে হয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সড়ক পরিবহন আইনের সঙ্গে যুক্তিযুক্ত না হয়। তাহলে বিষয়গুলো আমরা বিবেচনা করে দেখব।’
বিআরটিএ এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে পারছে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন: আমাদের দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকের সংখ্যা অনেক কম। তার মধ্যে নতুন আইনের ফলে লাইসেন্স ছাড়া কেউ গাড়ি চালাবেন না বলে চালকের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। আশা করছি, একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফির সভাপতিত্বে বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনসহ পরিবহন খাতের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।