অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেছেন: গণকবর, গণহত্যা এবং বধ্যভূমির সংখ্যা অনুসন্ধান করে ‘আসল সংখ্যা’ বের করার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে দেশের দশটি জেলায় জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা ও নির্যাতনের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘গণহত্যা, বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ১৯৭১ সালে গণহত্যার সংখ্যা সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ের জরিপ তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা নিয়ে দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বিতর্ক সৃষ্টি করা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক বলে মনে করেন অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।
তিনি বলেন: একাত্তরে যারা প্রত্যক্ষভাবে নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা কখনোই পাকিস্তানি ও তাদের সহযোগীদের অপরাধ ভুলে যেতে পারেন না।
তিনি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করে বলেন: যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী এবং পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষাবলম্বন করে কথা বলে তাদের জন্য শাস্তিযোগ্য আইন প্রণয়ন করতে হবে। স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ ব্যতীত পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রেই যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক দল নেই।
সেমিনার উদ্বোধনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন: মুক্তিযুদ্ধকালে দেশের সকল নারী আবদ্ধ জীবনযাপন করেছেন। অনিশ্চিত, অস্থির, দুর্ভাবনা ও শঙ্কার মধ্যদিয়ে নারীদের সময় কেটেছে। প্রতিবেশি এবং কাছের মানুষগুলোর অনেকে রাজাকারের খাতায় নাম লিখিয়ে শত্রু হয়েছে। তারা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। পাকিস্তানিদের নির্যাতনের বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা কখনোই ভুলবার নয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি ড. খালিদ কুদ্দুসের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোজাহিদুল ইসলাম।
সেমিনারে বিভিন্ন জেলায় জরিপ সম্পন্নকারী শিক্ষক-গবেষকগণ তাদের প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ অংশগ্রহণ করেন।