নারায়ণগঞ্জে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই ও পরে সাংসদের নির্দেশে কান ধরে উঠবসের ন্যক্কারজনক ঘটনায় দেশব্যাপী শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বইছে ঝড়।
এমন অমানুষিক কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেদের কানধরা ছবি কিংবা ভিডিও পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। শুধু দেশে নয় প্রবাসী বাংলাদেশী আশা নাজনীন কানে ধরা ছবি পোস্ট করেন। এছাড়াও অভিনেতা ইরেশ যাকের, রওনক হাসান এবং লেখক রাজেশ পাল কানে ওঠবস করা ছবি পোস্ট করে সকল শিক্ষকদের নিকট ক্ষমা চেয়েছেন।
অনেকে আবার ‘জাতির সর্বোচ্চ পদে আসীন এবং জাতির মেরুদন্ড বলে স্বীকৃত মহান শিক্ষকক অপমানে আমি লজ্জিত স্যার বলে নিজের কান ধরে উঠবস করার ছবি পোস্ট করেছেন।
এমডি মাসুদ মিয়া নামে একজন ব্যক্তি কানে ধরা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, শিক্ষক হল মানুষের বিবেক, গোটা জাতির বিবেক। সেই শিক্ষককে যখন কোন অবিবেকবান এইভাবে অপমান করে তখন গোটা বাঙ্গালি জাতি অপমানিত হয়।
একটি বেসকারি টেলিভিশনে কর্মরত সাইফুল বাতেন টিটু কান ধরা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, আমি একজন স্কুল শিক্ষকের ছেলে। আমার বাবার মত-ই একজন শিক্ষককে তার ছাত্র এবং হাজার হাজার মানুষের সামনে কান ধরে উঠবস করিয়েছে একজন আইন প্রনেতা।
ঘটনাটি আমার বাবার সাথেও ঘটতে পারতো। জানি এই বর্বরতার কোনদিন কোন বিচার এদেশে হবে না। আমার ফেইসবুক বন্ধুদের মধ্যে যারা শিক্ষকের সন্তান রয়েছেন তাদের কাছে অনুরোধ করবো আসুন আমারা কান ধরে আমাদের বাবাদের কাছে মাফ চেয়ে নি। আব্বু ভুল করেছি…… মাফ করে দাও। আমরা দিন দিন জানোয়ার হয়ে যাচ্ছি আব্বু। আমারা আর কোনদিন মানুষ হতে পারব না আব্বু। আব্বু মাফ করে দাও।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ভবনের সামনে কান ধরে দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ করে শিক্ষক শ্যামল কান্তির কাছে জাতির পক্ষ থেকে ক্ষমা চান তারা।
গত ১৩ মে বিকেলে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যাণদি এলাকায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে সবার সামনে কান ধরে উঠবস করিয়ে ক্ষমা চাওয়ান স্থানীয় সংসদ ও জাতীয় পার্টি নেতা সেলিম ওসমান।