বাঙালি জাতি সত্ত্বার এক মহান প্রতিভূ সত্যজিৎ রায়। শুধু বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলের নয়, উপমহাদেশের এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব তিনি। সাহিত্যিক, নির্মাতা, শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এরকম বহু পরিচয়ে তাকে অভিহিত করা যায়। ১৯২১ সালে জন্ম নেয়া গুণী এই মানুষের জন্মশতবর্ষ রবিবার (২ মে)।
‘পথের পাঁচালি’ সিনেমা নির্মাণের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পে সত্যজিৎ রায়ের যাত্রা শুরু। এরপর তিনি একের পর এক অসাধারণ সব সিনেমা নির্মাণ করেছেন। জন্মশতবর্ষে দেখে নিতে পারেন কিংবদন্তী এই নির্মাতার আলোচিত সিনেমাগুলো:
অপু ট্রিলজি: সত্যজিৎ রায়ের তিন পর্বে তৈরি অপুর কাহিনী পঞ্চাশের দশকে চলচ্চিত্র জগতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। শিশু অপুর বাল্যজীবন নিয়ে এর প্রথম খণ্ড পথের পাঁচালি ছিল সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি। পথের পাঁচালির পরবর্তী পর্ব ‘অপরাজিত’তে দেখানো হয়েছে বালক অপুর কিশোর হয়ে ওঠার কাহিনী। তৃতীয় ও শেষ পর্ব ‘অপুর সংসার’।
মহানগর: নরেন্দ্রনাথ মিত্রের ‘অবতরণিকা’ গল্প অবলম্বনে ১৯৬৩ সালে ‘মহানগর’ নির্মাণ করেন সত্যজিৎ রায়। নগরায়নের ফলে ষাটের দশকে বাঙালি মধ্যবিত্তের জীবনে সৃষ্ট নানা জটিলতা এবং তাদের মানসিক জগতের পরিবর্তন নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ছবিটি।
চারুলতা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস ‘নষ্টনীড়’ অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় নির্মাণ করেন ‘চারুলতা’ বা ‘দ্য লোনলি ওয়াইফ’। সামাজিক বেড়াজালের মধ্যে ‘চারুলতা’র এগিয়ে যাওয়াকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছবিতে।
অরণ্যের দিনরাত্রি: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ অবলম্বনে নির্মাণ করা হয়েছে এই সিনেমা। চারজন যুবককে নিয়ে তৈরি হয়েছে ছবির কাহিনী। শহরের বন্দিজীবন থেকে বের হয়ে চার বন্ধুর অরণ্যের আদিমতায় নিজেদের আবিষ্কারের গল্প এটা।
হীরক রাজার দেশে: হীরক রাজার দেশে একটি রাজনৈতিক চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রের প্রতিটি চরিত্রই প্রতীকী। রাজসভার সবাই রাজার কথার সাথে সুর মেলায়। দেখানো হয় সামাজিক বৈষম্য। ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমার বিপ্লবী চরিত্র হচ্ছে উদয়ন পণ্ডিত। উদয়ন পণ্ডিত হচ্ছে রাজার সবচেয়ে বড় শত্রু।
আগন্তুক: সত্যজিৎ রায়ের ক্যারিয়ারের সর্বশেষ ছবি ‘আগন্তুক’। হালকা মেজাজের চলচ্চিত্র এটি। ছবিটি সত্যজিৎ রায় নির্মাণ করেন তার ছোটগল্প ‘অতিথি’ থেকে। ছবির প্রধান চরিত্র মনোমোহন মিত্র পুরো বিশ্বে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু তার বরাবরই পছন্দসই বন্য জীবন।