স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী আজ (২৩ জুলাই)। সে উপলক্ষে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বঙ্গতাজের স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন তার ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ।
তাজউদ্দিন আহমদ গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া (দারদরিয়া) গ্রামে ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলভী মো. ইয়াসিন খান ও মায়ের নাম মেহেরুন্নেছা খানম।
মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে তাজউদ্দীন আহমদের সক্রিয় রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর।
জন্মবার্ষিকীতে তাজউদ্দিন আহমেদের স্বপ্নের কথা জানিয়ে সোহেল তাজ ফেসবুকে লিখেছেন: ‘আমাদের সবারই একটি পরিচয় আছে- আমরা সবাই কারো না কারো সন্তান। আমাদের বাবা/মা আছে, দাদা/দাদি, নানা/নানী আছে। তেমনি একটি দেশের পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায় তার ইতিহাসে। বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস হচ্ছে একটি গৌরবের ইতিহাস, মুক্তি ছিনিয়ে আনার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ করে ত্রিশ লাখ শহীদসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার ইতিহাস। প্রশ্ন হচ্ছে কেন সেদিন বাংলার যুবকরা এমনকি এগারো- বারো বছর বয়েসের যুবকরা স্বেচ্ছায় নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ?
আজকে আমরা যদি কোন মুক্তিযোদ্ধা কে জিজ্ঞেস করি তিনি কেন নিজের জীবন বাজি রেখে সেদিন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন- তিনি নির্দ্বিধায় বলবেন মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য, সোনার বাংলার স্বপ্নের জন্য।
সোনার বাংলার স্বপ্ন? কি এমন স্বপ্ন এটা যার জন্য জীবন দিতে তারা প্রস্তুত ছিলেন? এটা কি কোন সোনা দিয়ে তৈরী ঘর বাড়ি/দালান কোঠা ?
উত্তরে তিনি নির্দ্বিধায় বলবেন যে, সোনার বাংলার স্বপ্ন হচ্ছে এমন একটা সুন্দর দেশ যেখানে সকল মানুষ- নারী পুরুষ, গরীব ধনী, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমান অধিকার নিয়ে নিরাপদে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে। এমন একটি স্বপ্নের দেশ যেখানে একটি মানুষ খাদ্যের অভাবে মারা যাবে না। এমন একটি দেশ যেখানে একটি মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। এমন একটা সোনার বাংলা যেখানে আমাদের সন্তানরা স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় নির্দ্বিধায় নিরাপদে শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। এমন একটি সমাজ ব্যাবস্থা যেখানে প্রাধান্য দেয়া হবে মেধাকে, যেখানে সবাই পাবে ন্যায় বিচার, আইন হবে সবার জন্য সমান, যেখানে দুর্নীতি, দলীয় করুন কোণ স্থান পাবে না।
তিনি বলবেন: এই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আর এই স্বপ্ন অর্জনের লক্ষ্যে সেদিন মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ।
শুভ জন্মদিন বঙ্গতাজ- তোমাকে ধন্যবাদ।
আজ মঙ্গলবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকী পালন করবে কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। অপরদিকে ঢাকা ও গাজীপুরে থাকছে নানা আয়োজন।