ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পুনর্মিলনীতে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদর্শহীন রাজনীতি দেশকে কিছু দিতে পারে না। আর এ কারণেই ছাত্রলীগকে জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে চলতে হবে।
আওয়ামী লীগের সহযোগী এ সংগঠনটির নেতাকর্মীদের প্রতি তার পরামর্শ – ‘নিজেদের আচার-ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।
জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন আর বেলুন উড়িয়ে শুরু হয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাত্র সংগঠন, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর। মঞ্চে উঠে সকলের অভিবাদনের জবাব দেওয়ার পর ছাত্রলীগের সংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান থেকে ছাত্রলীগের বর্তমান দুই ভারপ্রাপ্ত নেতাকে পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন তিনি।
এরপর দিক নির্দেশনামূলক বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাঙালির প্রতিটি অর্জনে ছাত্রলীগ যেমন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে; ভবিষ্যতেও সেই আদর্শের রাজনীতি অব্যাহত রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন: ‘ছাত্ররা আমাদের ভবিষ্যত। ভবিষ্যতে তারা দেশকে পরিচালনা করবেন। তাদের যদি বিপথে নামানো হয়, রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য তাদের ব্যবহার করা হয় তাহলে তারা দেশকে নেতৃত্ব দেবে কীভাবে? সততা-আদর্শ ছাড়া সফলতা আসবে না। সাময়িকভাবে নামডাক আসতে পারে, অর্থবিত্ত হতে পারে। কিন্তু দেশের ইতিহাসে মনে রাখার মতো কিছু করতে পারবেন না।’
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক বলেন: ‘২০২০ সাল। এই সালের ৪টা জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে। এই বছরের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা পালন করব। ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল আমরা মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছি।’
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছাত্রলীগের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন: ‘পাকিস্তান সরকার আমাদের ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করে ছাত্রলীগ। আমরা দেখেছি, যখনই কোনো সংগ্রাম হয়েছে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।’
খালেদা জিয়া ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রেখে দেশ ও জাতির আস্থা অর্জন করার নির্দেশনা দেন।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নিজ হাতে গড়া এই সংগঠনটি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, এমনকি নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছে সামনে থেকে। বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সেই সংগঠনটি এবার পা রেখেছে বাহাত্তরে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশের ১শ ১১টি সাংগঠনিক জেলার সাবেক-বর্তমান নেতাদের নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই পুনর্মিলনীর আয়োজন।
বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান জয় আর সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।