মৃত ভেবে দাফনের আগে কেঁদে উঠা অপরিণত শিশু গালিবা হায়াতকে ঢাকায় নিয়ে আসার একদিন পরও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্কয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন থাকা শিশুটির ওজন আধা কেজিরও কম। চিকিৎসকরা বলছেন, জন্মের পর বিভিন্ন হাতে হাতে ঘোরায় জটিল ইনফেকশনেও আক্রান্ত হয়েছে সে।
ফরিদপুর প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের নিয়মিত খেলোয়াড় নাজমুল হুদা মিঠু ও তার আইনজীবী স্ত্রী নাজনীনের প্রথম সন্তান গালিবা হায়াত। ২২ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের একটি হাসপাতালে তার জন্ম। কিন্তু মাত্র ২৩ সপ্তাহেই জন্ম নেওয়া অপরিণত শিশুটিকে চিকিৎসকরা অবস্থাদৃষ্টে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই শিশুটিকে দাফনের উদ্যোগ নেন স্বজনেরা। রাতে দাফন করা সম্ভব না হওয়ায় শিশুটিকে গোরস্থানেই রাখা হয়।
ভোরে দাফনের প্রস্তুতির সময় শিশুটি হঠাৎ নড়ে উঠে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক প্রবাসীর সহায়তায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসা হয় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে। শিশুটিকে বাাঁচিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে শিশু চিকিৎসক আফতাব রাজের তত্ত্বাবধানে আট সদস্যের চিকিৎসক দল।
ডা. আফতাব ইউসুফ রাজ বলেন, ওর ওজন ছিলো মাত্র ৪৫০ গ্রাম। আধা কেজিরও কম। ওর শ্বাস ছিলো কিন্তু তা ভালো ছিলো না। নানান হাতে ওকে ধরা হয়েছে, ওকে একটা কার্টনে রাখা হয়েছিলো। তাই পরিবেশ থেকেও সে ইনফেকশনগুলো পেয়েছে। ওকে প্রায় ৬ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। আজ দুপুরের পর ওর রক্তক্ষরণ কিছুটা কমেছে। তারপরও বলতে পারছি না রক্তক্ষরণ পুরোপুরি কমে গেছে, যেকোনো সময় আবার হতে পারে।
আশায় বুক বেঁধে আছেন মা নাজনীন এবং বাবা মিঠু।
নাজমুল হুদা মিঠু বলেন, যে আমাকে হেল্প করেছে সে আমাকে ফোনে বলেছিলো, আমি আপনাকে একটা স্পন্সর দিতে চাই, যদি আপনি কিছু মনে না করেন। প্রথমে চাইনি যে এটা নিবো। পরে ভাবলাম, সন্তানকে বাঁচানোর যেহেতু সুযোগ এসেছে তাই সেটা নিই। পরে তার হেলিকপ্টারে ঢাকায় আসছি, স্কয়ারে ভর্তি করেছি। এখন দেখা যাক কি হয়।
মা-বাবা, স্বজন, চিকিৎসকসহ সকলের প্রার্থনা যেনো হায়াত পায় গালিবা হায়াত।