অপারেশন আগস্ট বাইট-এ নিহত জঙ্গি সাইফুল ইসলামের সম্পর্কে জানা যায়, চাকরির খোঁজে ঢাকা যাচ্ছি বলে গত শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হয়। গতকাল সোমবার সাইফুল বোনকে ফোন দিয়ে বলে আগামী বুধবার বাড়ি যাবে এমনটাই বলেছেন চ্যানেল আই অনলাইনকে সাইফুলের গ্রামের মেম্বার শফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর পান্থপথের ওলিও ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে সোয়াটের গুলি ও নিজের কাছে থাকা বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র সাইফুল ইসলাম। অভিযানের পর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহিদুল হক জানান নিহত সাইফুলের বাবা জামাতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সাইফুল সাবেক শিবির কর্মী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় নিহত সাইফুলের গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া থানার ৯ নং সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাটি গ্রামে। সে পড়াশুনা করত খুলনা বিএল কলেজে।
৯ নং সাহস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, নিহত সাইফুল ইসলামের গ্রামের নাম নোয়াকাটি। তার বাবার নাম আব্দুল খয়ের মোল্লা। তিনি গ্রাম মসজিদের ইমাম। সাইফুলের মা বাকপ্রতিবন্ধী। তার স্কুল পড়ুয়া দুই বোন আছে।
সাইফুল ও তার বাবার রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নোয়াকাটি একেবারেই গ্রাম এলাকা। এখানে রাজনীতি তেমন হয় না। তবে তিনি জামাতে ভোট দেন।’
খুলনা বিএল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামছুর রহমান বলেন, ‘সাইফুল ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে বিএল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি হয়। প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়। তৃতীয় বর্ষে কোনো ক্লাস করেনি। ফর্ম ফিলআপও করেনি। সাইফুলের সহপাঠীরা তৃতীয় বর্ষ ফাইনাল দিয়ে এখন চতুর্থ বর্ষে। কিন্তু তৃতীয় বর্ষ থেকে সাইফুলের কোনো তথ্য নেই কলেজে । ক্লাস না করায় তার তেমন বন্ধুও তৈরি হয়নি। ক্লাসমেটরাও খুব একটা বলতে পারছে না তার সম্বন্ধে।’
নোয়াকাটি গ্রামের মেম্বার শফিকুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বেশির ভাগ সময় গ্রামের বাইরে থেকে পড়াশুনা করেছে বলে গ্রামে তার তেমন কোনো বন্ধুও নেই। ঈদে ঈদে বাড়ি আসত। একা একা থাকতো। কারও সাথে তেমন মিশত না।
সাইফুল ইসলামের বাবার সম্বন্ধে তিনি বলেন, ‘ওর বাবা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল না। তবে ভোট দিত জামাতে। কিন্তু সাইফুলের শিবিরে সম্পৃক্ততার কোনো খবর তাদের কাছে নেই।’
এখন সাইফুলের বাড়ির অবস্থা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশপাশের মানুষ আসছে। মিডিয়ার মানুষ আসছে। সবাই খোঁজ খবর নিচ্ছে। সাইফুলের বাবাকে পুলিশ থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সাইফুলের বইগুলো নিয়ে গেছে।’