বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যেকার ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, ২০১৭ সাল হবে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বের বছর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই সফরের মধ্যে দিয়ে দু’দেশের সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সহযোগিতায় উন্নীত হয়েছে।
দুপুরের কিছু পরে সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান।
এরপর দু’দেশের দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়। পরে দুই দেশের সরকার প্রধানের নেতৃত্বে দু’দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন।
পরে দুই শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২৭ টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করে দু’দেশ। সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন অর্থনৈতিক সহযোগিতার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।
শি জিনপিং বলেন, ২০১৭ সালকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি বন্ধুত্বের বছর বলে উল্লেখ করতে চাই। আমরা এই মর্মে একমত হয়েছি যে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স, কাউন্টার টেরোরিজমের মতো বিষয়গুলোতে আমরা দ্বিপাক্ষিক সাহায্য অব্যাহত রাখবো। একই সঙ্গে ইকনোমকি করিডোরসহ আঞ্চলিক স্বার্থের বিষয়গুলোতে যোগাযোগ বাড়াবো।
এক চীন নীতির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে একসাথে কাজ করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এসব চুক্তি সাক্ষরের মধ্যে দিয়ে দুটি দেশের মধ্যে আরো উচ্চ পর্যায়ের পরিকল্পনায় একসঙ্গে কাজ করার পথ খুলে দেবে। এই সফরের মধ্যে দিয়ে দু’দেশের সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সহযোগিতায় উন্নীত হয়েছে। এসব সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাবো।
জঙ্গিবাদ দমনে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন জানিয়ে ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্ব আরো সামনে এগিয়ে যাবে। দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার ২৭টি চুক্তি আমরা সাক্ষর করেছি। উচ্চ পর্যায়ের অনেকগুলো বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার কথা আলোচনা করেছি আমরা।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন ছিলো বঙ্গবন্ধুর সেই পথে আমরা অনেকটাই এগিয়েছি। সেই স্বপ্ন পূরণেও বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্ব সহায়ক হবে। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হবো আর ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশ। সেসব স্বপ্ন পূরণের দিকেও এগিয়ে যাবো আমরা।
আগামীকাল জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিমসটেক সামিটে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতের গোয়ায় যাবেন চীনের প্রেসিডেন্ট।
শুক্রবার বিকাল তিনটায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি প্রথমে একান্ত বৈঠক ও পরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেন। বৈঠক শেষে দু’দেশের মধ্যে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।