নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা
বুরহান ওয়ানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার আবার রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে পুরো উপত্যকা।
দেশটির গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হামলায় আহত হয়েছে পুলিশের ৯৪ জন সদস্য। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কমপক্ষে ৩টি থানা।
শ্রীনগর ও দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ দিন বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায়, নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুড়তে থাকে। কুলগানের বিজেপি অফিসেও হামলা চালায় জনতা।
বুরহানের মৃত্যুতে শুক্রবার থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিল শ্রীনগর ও দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকা। শনিবার তা আছড়ে পড়ে নিরাপত্তারক্ষীদের উপর। কার্ফু জারি সত্ত্বেও বুরহানের মরদেহ নিয়ে রাস্তায় নামেন কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ। যখনই কোনো স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সেনার গুলিতে নিহত হয়েছে, বাসিন্দারা রাস্তায় নেমেছেন, বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেছেন। এমনকী সেনার সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন।
ওয়ানির নিহত হওয়ার পরই শুক্রবার রাত থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর উপত্যাকায়। তার মৃত্যুর প্রতিবাদে শনিবার উপত্যকায় হরতালের ডাক দিয়েছে হুরিয়ত কনফারেন্স। এই অবস্থায় কাশ্মীরের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মেহবুবা মুফতির সরকার।
উত্তেজনার কথা মাথা রেখে পুলওয়ামা, অনন্তনাগ, শোপিয়ান, বারামুল্লা ও শ্রীনগরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সতর্কতা হিসাবে কাশ্মীর উপতক্যায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওযাইজ ওমর ফারুক, মহম্মদ ইয়াসিন সহ অধিকাংশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
বারামুল্লা থেকে বানিহাল পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবাও সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে অমরনাথ যাত্রা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের কোকরনাগ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত হয় বুরহান ওয়ানি। এত কম বয়সেই উপত্যকার অন্যতম ভয়ঙ্কর জঙ্গি হয়ে উঠেছিল ওয়ানি। সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয় তরুণ জঙ্গির ডাকে সাড়া দিয়ে বহু কাশ্মীরি তরুণ জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছিল।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছেও সে অন্যতম টার্গেট হয়ে উঠেছিল। সেনাবাহিনীর মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি তালিকায় ছিল ওয়ানি। ওয়ানির জন্য ১০ লাখ রুপি আর্থিক পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল সরকার।