এমন নয় পিচ থেকে খুব সুবিধা আদায় করতে পারছেন বোলাররা। এমন নয় আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত কাঁপা-কাঁপিতে কাটছে ব্যাটসম্যানদের। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যতক্ষণ ক্রিজে থাকছেন, নির্বিষই মনে হচ্ছিল পাকিস্তানের বোলিং! হলে কী হবে? মাহমুদউল্লাহ-লিটনদের ক্রিজে থাকতে তো হবে। তারা পারলেন না সম্ভাবনার অঙ্কুরগুলোকে ফলে রূপ দিতে। তাদের ছোট ছোট ইনিংসগুলো অকালে ঝড়ে গেল বড় বড় আক্ষেপ জমিয়ে।
সকালে আট বলের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারানোর পর মুমিনুল-শান্তর ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে কিছু করে দেখানোর আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে উইকেট উপহার দিয়ে সম্ভাবনার সেই ইনিংস অকালে ছুঁড়ে আসেন মুমিনুল হক। অধিনায়কের দেখানো পথ অনুসরণ করে গেলের পরের সবাই। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে তিন উইকেট হারানো সফরকারীরা চা পানের আগে আরও তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে তাই ধুঁকছে।
বাংলাদেশ-১৭২/৬ (৬৩)
পাকিস্তানে দ্বিতীয়দফার সফরে শুক্রবার সিরিজের প্রথম টেস্টে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে এসে দ্রুত দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী তামিম ইকবাল ফিরেছেন ৩ রানে।
সাইফ দুই বলের ইনিংসে শাহিন আফ্রিদির অফস্টাম্পের বাইরের বলে পা না নড়িয়ে খেলতে যেয়ে দ্বিতীয় স্লিপে শফিকের ক্যাচে ফিরেছেন। পরের ওভারে তামিম পড়েন স্বাগতিক ফিল্ডারদের কড়া এলবিডব্লিউ আবেদনের মধ্যে। আব্বাসের বল তার প্যাডে আঘাত হানলে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে উইকেট তুলেছে পাকিস্তান। থামে বাঁহাতি ওপেনারের ৫ বলের যাত্রা।
সেখান থেকে শান্ত ও মুমিনুলের প্রতিরোধে অনেকটা পথ আগায় বাংলাদেশ। জুটিতে পঞ্চাশ পেরিয়ে ৫৯ পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন দুজনে। স্বস্তির সেই সময়েই শাহিন আফ্রিদির অফস্টাম্পের অনেকটা বাইরের বল তাড়া করতে যেয়ে উইকেটরক্ষক রিজওয়ানের গ্লাভসে জমেন টাইগার দলপতি। মুমিনুলের নামের পাশে তখন ৫ চারে ৫৯ বলে ৩০ রান। নিরেট সম্ভাবনার ইনিংসের অকাল যবনিকা!
মুমিনুল নিজের ইনিংসটি ফেলে এলেও নাজমুল হোসেন শান্ত তখনও পথ হারাননি। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে এগোচ্ছিলেন। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার সময় তার নামের পাশে ৪৪, ফিরে আর কোনো রানই যোগ করতে পারলেন না।
মাহমুদউল্লাহ থাকলেন আরও কিছুক্ষণ। উইকেটে খুঁটি গেড়ে তার ইনিংসটাও ২৫ রানে আটকে গেল।
পরের প্রতিরোধটা লিটন দাস ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটে। দুজনে জুটিতে এনে দিলেন ৫৪ রান। লিটন যতক্ষণ ব্যাট করেন, দেখে মনে হবে না তাকে সহজে আউট করা সম্ভব! কিন্তু ওই যে এক সমস্যা, যতক্ষণ ব্যাট করেন। ৩৩ পর্যন্ত গেলেন সম্ভবত দিনের সবচেয়ে সাবলীল ব্যাটসম্যান হয়ে খেলে। তিনিও ৩৩ রানের বেশি এগোতে পারলেন না।
স্পিনার তাইজুলকে (১*) নিয়ে মিঠুন অবশ্য কিছু যোগ করতে চেষ্টায় আছেন। চা বিরতির পর নিজের ৩৩ রানের ইনিংসটা বড় করতে চেষ্টা করবেন, সঙ্গে বাংলাদেশের সংগ্রহটাও।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, ইবাদত হোসেন।