জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ছাড়াই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্র সংগঠনটির ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়।
সেখানে উপস্থিত কয়েকজন নেতাকর্মী চ্যানেল আই অনলাইনকে নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রতি বছর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার সাথে সাথে জাতীয় পতাকা এবং ছাত্রলীগের পতাকা উত্তোলন করলেও এবার তা করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল ৪ঠা জানুয়ারি। সেদিন আমরা জাতীয় পতাকা এবং ছাত্রলীগের পতাকা উত্তলন করে পরবর্তীতে অনুষ্ঠান স্থগিত করেছিলাম৷ বাকী অনুষ্ঠান আজকে করলাম৷’
‘‘যেহেতু সেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তলন করেছিলাম, তাই আজকে করিনি৷ এটা নিয়ে ভুলবোঝাবুঝি হচ্ছে।’’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক এক সম্পাদক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘প্রতি বছর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান জাঁকজমকভাবে আয়োজন করা হয়। এবারে তা করা হয়নি। অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা এবং ছাত্রলীগের পতাকা উত্তোলন ছাড়াই অনুষ্ঠান শেষ করা হয়। এ ধরনের আয়োজন আমরা কখনও দেখিনি। এটা ছাত্রলীগের ঐতিহ্যের সাথে যায় না।’
‘‘এছাড়াও র্যালিতে ডিজে গান এবং হিন্দি গান বাজিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। অথচ ছাত্রলীগ বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন করেছে। এটা কি ধরনের সংস্কৃতি?’’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আগেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কথা সকলের সামনে একাধিকবার বলেছেন। কিন্তু তারা কথা রাখেননি। এর জন্য আমাদের ক্ষোভ এবং চরম হতাশার জন্ম নিয়েছে।’
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ৪ঠা জানুয়ারি উপলক্ষ্যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপন করার কথা থাকলেও সে সময় আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছিল।
শনিবারের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
বাংলাদেশ ছাত্র লীগ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং এগারো দফা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্বাধীকার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও ছাত্রলীগ অবদান অসামান্য। মুজিব বাহিনী গঠন করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তারা। বাংলাদেশের বিজয় লাভেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।