সামনে কারো মৃত্যু আসন্ন দেখেও তার সহায়তা না করে ছবি তোলার অভিযোগ বিশ্বব্যাপি ফটোসাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। এবার সেই অভিযোগের আগুনে খানিকটা জল ঢাললেন এক ফটোগ্রাফার।
এর আগেও সিরিয়ার ছবি দিয়ে বিশ্বব্যাপি সবার মন জয় করেছেন বেশ কিছু ফটোগ্রাফার। ২০১৫ সালে সমুদ্রতটে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা মৃত আইলান কুর্দির ছবিও বেশ সাড়া ফেলেছিলো। তারপর গত বছর একটি অ্যাম্বুলেন্সে রক্তাক্ত শিশু ওমরান দাকনিশের ছবিও বেশ প্রভাবিত করে সবাইকে। আলেপ্পোতে একটি বোমা বিষ্ফোরণের পরে ধুলোমাখা, রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
এবার ছবি তোলার আগে নিজের মানবিকতাকে প্রকাশ করলেন এক ফটোগ্রাফার।
গত সপ্তাহে সিরিয়ার একটি গ্রাম থেকে উদ্ধার হওয়া সিরিয়দের বাসে করে নিয়ে যাওয়ার সময় বোমা হামলার ঘটনায় ১২৬ জন নিহত হন।
ফটোগ্রাফার ও কর্মী এবিডি অ্যালকাদর হাবাক সেইখানে কাজ করতেন, হঠাৎই তিনি বোমা বিষ্ফোরণের আওয়াজ শোনেন। আওয়াজ শুনে সেখানে এসেই তিনি আটকে পড়াদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করেন।
আলকাদের হাবাক সিএনএনকে বলেন, দৃশ্যটি খুবই ভয়ানক ছিলো। বিশেষ করে শিশুদের নিজের সামনে আঘাত পেতে দেখে ও মরতে দেখাটা খুবই কষ্টের। তাই আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করি যে আমরা আমাদের ক্যামেরা সাইডে রেখে আগে উদ্ধার কাজ চালাবো।
হাবাকের উদ্ধার করা প্রথম শিশুটি ছিলো মৃত। এরপর তিনি অন্যদের দিকে ছুটে যান। হাবাক যোগ করেন, তখনো কেউ চিৎকার করছিলো, দূরে থাকো, শিশুটি মারা গেছে। কিন্তু আমার মনে হলো ও শ্বাস নিচ্ছে।
পরে শিশুটিকে তুলে নেন হাবাক এবং নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান। তখনও ক্যামেরা অন ছিলো, ফলে যা ঘটছে সবই রেকর্ড হচ্ছিলো।
মুহাম্মদ আলগারেব নামে সেখানে আরো এক ফটোগ্রাফার ছিলো। সেও কিছু আহত মানুষকে আগে উদ্ধার করার পরে ছবি তোলা শুরু করেন।
ওই শিশুটিকে নিরাপদ জায়গায় রেখেই আবার ফেরত আসেন হাবাক। আরেকজনকে উদ্ধার করতে। কিন্তু ওই শিশুটিকে মরে পড়ে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাবাক। সেই ছবিই ফ্রেমবন্দী হয় অন্য একজনের ক্যামেরায়।