কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা মারা গেছেন বুধবার। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
খ্যাতি আর বিতর্ককে সমানভাবে জীবনে জায়গা করে দিয়ে পথ হেঁটেছেন ম্যারাডোনা। তার একটা অংশ যেমন ছিল আলোতে উজ্জ্বল, তেমনি অন্য পাশটা ঢাকা থাকত অন্ধকারে।
ম্যারাডোনার জীবনের স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত দেখে নেয়া যাক স্থিরচিত্রে-
সেরাদের সেরা, তবে শিখতেও আগ্রহের কমতি ছিল না। ১৯৮০ সালে নিজ বাড়িতে এভাবেই পা তুলে নিজের মতো করে সময় কাঁটাতে দেখা যায় তাকে।
১৯৮২ বিশ্বকাপে, বেলজিয়ামের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে। তার টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছিল ব্রাজিলের বিপক্ষে ফ্লাইং কিকে লাল কার্ড দেখে।
১৯৮৪ সালের জুলাইয়ে, রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দরে। নাপোলির হয়ে খেলার জন্য চুক্তি সারতে এসেছিলেন, তাকে দেখে ঘিরে ধরে ভক্তরা।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিতর্কিত সেই ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল। ইংলিশ গোলরক্ষক পিটার শিলটনকে ফাঁকি দিয়ে বামহাত দিয়ে গোল করেছিলেন ম্যারাডোনা।
বেলজিয়ামের বিপক্ষে সেমিতে করেছিলেন জোড়া গোল। সেই গোলের একটির পর উদযাপন।
ওয়েস্ট জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জয়ের মুহূর্ত। অধিনায়ককে ঘাড়ে তুলে উদযাপনের মধ্যমণি করে রেখেছিলেন সতীর্থরা।
১৯৮৮ সালে নাপোলির অনুশীলনে বড় মেয়ে ডালমার সঙ্গে।
১৯৮৭ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পেলের সঙ্গে করমর্দন। দুজনকে সর্বকালের সেরা মেনে নিতে আপত্তি নেই কারোই।
১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে। ক্যামেরুনের বিপক্ষে সেই ম্যাচটা হেরে অঘটনের শিকার হয় আর্জেন্টিনা।
ক্যামেরুন ধাক্কা কাটিয়ে ঠিকই ফাইনালে পৌঁছে যায় ম্যারাডোনার দল। তবে রেফারির বিতর্কিত পেনাল্টি সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট জার্মানির কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় আর্জেন্টিনা।
১৯৯৪ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের ম্যাচটিই হয়ে আছে ম্যারাডোনার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ডোপ টেস্টে পজিটিভ হবার পর ম্যাচ শেষে তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০১০ সালে কোচ হয়ে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে নিয়ে যান ম্যারাডোনা। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ডাগআউটের এক দৃশ্য।
আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে শেষটা ভালো হয়নি তার। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে ৪-০ গোলে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে লিওনেল মেসিকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে আসেন কোচ ম্যারাডোনা।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার শীর্ষসারির দল জিমনেসিয়ার কোচ ছিলেন। নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের বিপক্ষে ২০১৯ সালে এটাই ছিল তার শেষ ম্যাচ। শেষ ম্যাচে চেয়ারে বসে শিষ্যদের নির্দেশনা দিতে দেখা যায় তাকে।
ক্লাব ক্যারিয়ারে নিজের সেরা সময়টা কাটিয়েছেন নাপোলিতে। এই ক্লাবটিকে প্রথমবারের মতো সিরি আ জেতান ম্যারাডোনা। প্রিয় তারকার মৃত্যুতে একদিনের শোক পালন করছে ক্লাবটি।