চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রথমেই শুভেচ্ছা। দেখতে দেখতে চারটি বছর পূর্ণ করল দেশের এই অন্যতম অনলাইন সংবাদ পোর্টাল। চ্যানেল আই অনলাইন মানুষের কাছে থাকতে পেরেছে। নির্ভীক সাংবাদিকতা করেছে। টেক্সট জার্নালিজম-এ আমি বলবো বেশ কিছু নতুন নজির সৃষ্টি করেছে। যেমন, ‘সম্পাদকীয়’ বিভাগটির কথা বলতে চাই। আমরাই প্রথম অনলাইনে এমন একটি উদ্যোগ হাতে নিই যেখানে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা লিখে থাকেন। কোনো রাজনৈতিক দল, পক্ষ, মত- এসব আমাদের প্রভাবিত করে না। কারণ আমরা গণমানুষের। আমরা গণমাধ্যম। আমরা সাংবাদিকতার জন্যই কাজ করছি। আমরা সত্য তুলে ধরব। এটাই আমাদের একমাত্র ব্রত। বাংলাদেশ আমাদের সকল শক্তির উৎস। একটি সংবাদকে কতোভাবে ভেঙ্গে আবার গড়া যায় সেটাও আমাদের মনোযোগের জায়গা। বিশেষ করে আমাদের স্পোর্টস, বিনোদন, অপরাধ, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক বিভাগের নিয়মিত পাঠক রয়েছে। মতামত বিভাগেও লিখছেন অনেকে। এবং সেখানেও আমরা বেশ সাড়া পাচ্ছি। ফেসবুক, বিনোদন, সংবাদ, মাল্টিমিডিয়ার ইউটিউবে আমরা বেশ ভাল করছি।
মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বা ডিজিটাল জার্নালিজমের কথা যদি বলি, আমরা ভালো করছি। তবে, আরও ভালোর দিকে, আমরা যেতে চাই। খুব শীঘ্রই আমরা আমাদের ডিজিটাল অপারেশন আরও বড় করছি। যেখানে এন্টারটেইনমেন্ট এবং নিউজ একসঙ্গে কাজ করবে। আপনারা জেনে হয়তো খুশি হবেন বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর এন্টারটেইনমেন্ট ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে চ্যানেল আইয়ের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা এখন সর্বাধিক। এটা দারুণ আনন্দের এবং গর্বের বিষয়। চ্যানেল আই অনলাইনে যারা লিখতো তারা এখন লেখার পাশাপাশি নিয়মিত ছবি তুলছে, ভিডিও করছে এবং দিনের আলোচিত সংবাদ নিয়ে একটি সময়োপযোগী ভিডিওতে নিজে ক্যামেরায় এসে ব্রিফ করছে। সো আমি, সাগর বা আমরা বলছি আমাদের ডিজিটাল গোল অনেক বড়। যেখানে বিনোদন, স্পোর্টস, নিউজ খুব বেশি অগ্রাধিকার পাবে। আমরা একটা সমন্বয় আশা করছি। এখানে বিজনেস-ও বেশ বড় একটা রসদ। নইলে এতোগুলো ভিশন আমরা অ্যাচিভ করতে পারবো না।
টিভিতে যে লাইভে আমরা থাকতে পারছি না, ফেসবুকে থাকতে চাই। ব্যাকপ্যাকে এই কাজটি আমরা করতেই পারি। সেই লাইভ ভিডিও আমরা দ্রুত নিয়ে যেতে চাই আমাদের মনিটাইজড ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে। ফিউচারে ওটিটি ও ভিওডি প্ল্যাটফর্মেও আমরা যেতে চাই।
একটি কথা আমি বিশেষভাবে বলতে চাই। এখনকার সাংবাদিকতা মানে শুধুমাত্র একটি টিভি, রেডিও, বা অনলাইন টেক্সট রিপোর্ট নয়। একজন সাংবাদিককে মাল্টিডিমেনশনাল হতে হবে। সে টিভির জন্য যে রিপোর্টটা করবে, তার জন্য লংগার ভার্সনটা দেবে অনলাইনে। আর যেকোনো স্পটে ছবি তুলবে, ভিডিও করবে। কারণ ছবি খুব কার্যকরী। একইভাবে ফেসবুক লাইভে যাওয়ার জরুরিত্ব এখন অনেক বেশি। আমি বলতে চাইছি টিভি, অনলাইন, রেডিও সাংবাদিক একই জায়গায় সবসময় থাকতে পারে না। যে যেখানে আছে সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যদি ঘটে তাহলে সেটা যেন কাভার হয়। সেদিকেই জোর দিতে হবে। তারপর বিবেচ্য হবে স্টোরিটা আসলে কোথায় ফিট করে। এভাবে অনলাইন শেয়ার করবে টিভিকে। টিভিও অনলাইনকে। টিভি এবং অনলাইন এন্ডে অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটরেরা এই সমন্বয়গুলো করে দেবে যাতে একজন সাংবাদিক স্পেসিফিকভাবে জানতে পারে তার কাজ কতটুকু। অনেক বেশি মানুষের কাছে দ্রুত রিচ করার জন্য সোশ্যাল এভিনিউগুলো খুবই উপযোগী। সংবাদ যদি হয় মানুষের জন্য, তাহলে তা মানুষের কাছে পৌঁছানোর দ্রুততম পথগুলো বের করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যে সাংবাদিক রিপোর্টে বের হয়েছিল সে অফিসে ফিরে তার রিপোর্টিং ইস্যু নিয়ে সাক্ষাতকার দেবে। অনলাইন ফেসবুক লাইভে সেটা কাভার করবে। একই রিপোর্টার পুরো সংবাদটির অ্যানালিসিস লিখবে। এভাবেই একটা রিপোর্ট পূর্ণতা পাবে চারদিক থেকে। এটা মডার্ন জার্নালিজম আমি বলতে চাই না। আমি বলতে চাই, এটাই মূলত সাংবাদিকতা। অ্যাজ আ হোল। আর মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্টদের ওয়েল-ইকুইপড না রাখলে ঘটনাস্থল থেকে ঘটনা কাভার করা খুবই দুষ্কর হয়ে পড়ে। তাদের সবধরণের ফ্যাসিলিটি এনশিওর করতে হবে।
সবশেষে বলতে চাই, সংবাদের নীতি-নৈতিকতা মেনে, দ্রুততম সময়ে নির্ভুল সংবাদ পরিবেশন করতে পেরেছে এই অনলাইন পোর্টালটি। পাঁচ-এ ৫ যে স্লোগান নিয়ে আমরা এত দূর এসেছি, আমাদের ইচ্ছে এবং স্বপ্ন থাকবে আরও সামনে যাওয়ার। সবাইকে আবারও অনেক অনেক শুভেচ্ছা। পাঁচ-এ ৫!!!
ছবি: সাকিব উল ইসলাম ও জাকির সবুজ
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)