সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে রোববারের ম্যাচ দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ অভিযান। দলের অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসানের যেটি চতুর্থ বিশ্বকাপ। টাইগারদের আত্মবিশ্বাসী শুরুর জন্য ব্যাটে-বলে দারুণ ভূমিকা প্রত্যাশা থাকবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের কাছে। অতীত পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুর ম্যাচে দেখা মেলে দুর্দান্ত সাকিবেরই।
২০০৬ সালে ওয়ানডে অভিষিক্ত সাকিব প্রথমবার বিশ্বকাপে নামেন ২০০৭ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসরে। শুরুটা হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। ততদিনে আস্থার নাম হয়ে ওঠা সাকিব পারফরম্যান্স দিয়েই দিনটি স্মরণীয় করে রেখেছেন। পরে ২০১১ সালে ঘরের মাটিতে ও ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে সেরা পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করেছেন। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই চিরচেনা সাকিবেরই দেখা পাওয়ার প্রত্যাশা।
২০০৭ সালে উইন্ডিজ আসরে পোর্ট অব স্পেনে বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় এক জয়েরই ম্যাচ। ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরুর সাকিবের। নেমে ব্যাটে তুলে নিয়েছিলেন ফিফটি। ৮৬ বলে ৫৩ রানের ইনিংস।
ভারতকে তিন বল হাতে রেখে ১৯১ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। মাশরাফী ৪, রাজ্জাক-রফিক ৩টি করে উইকেট নিয়েছিলেন। ১০ ওভার বল করে ৪৪ রানে উইকেটশূন্য থাকেন সাকিব। পরে যেটা ব্যাটিংয়ে পুষিয়ে দেন। ৫ উইকেটে জয়ের ম্যাচে ৫ চার ও এক ছক্কায় সাজান নিজের ফিফটি। ওই ম্যাচে তামিম ফিফটি করে আউট হলেও অপরাজিত ফিফটিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন মুশফিক।
সাকিবের পরের বিশ্বকাপ ২০১১তে, তখন তিনি বাংলাদেশের অধিনায়ক। ঘরের মাঠে উদ্বোধনী ম্যাচ। প্রতিপক্ষ একই, ভারত। বীরেন্দ্রর শেবাগ ১৭৫ আর বিরাট কোহলির হার না মানা শতকে ভারত ৩৭০ তুলে দিনটি বিমর্ষ করে দেয় টাইগারপ্রেমীদের জন্য। ১০ ওভারে ৬১ রান দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম খরুচেই থাকেন সাকিব, বোল্ড করেছিলেন শেবাগকেই।
বাংলাদেশের ৮৭ রানে হারের ম্যাচে ব্যাটে এসে ফিফটি তুলে নেন সাকিব। তামিমের ৭০ রান আর সাকিবের ৫৫-ই ওই ম্যাচে সেরা ইনিংস। ৫ চারে ৫০ বলে ইনিংসটি সাজান তখনকার টাইগার অধিনায়ক।
নিজের তৃতীয় বিশ্বকাপে ২০১৫ সালে নামেন সাকিব। ক্যানবেরাতে প্রতিপক্ষ এবার আফগানিস্তান। নিজেরা ২৬৭ রান তুলে আফগানদের ১৬১ রানেই প্যাকেট করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ছিলেন সাকিব।
সেই ম্যাচে দুই ফিফটি ছিল বাংলাদেশের। মুশফিকের ৭১ ছাড়া তার নিজের ৬৩ রানের ইনিংস। সাকিব ৬ চার ও এক ছক্কায় ৫১ বলে সাজান ৬৩ রানের ইনিংসটি। পরে বল হাতে নেন ২ উইকেট। ৮.৫ ওভারে ৪৩ রান খরচায়।
দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আরেকটি বিশ্বকাপে নেমে পড়ছেন সাকিব। ওভালে এবারের প্রতিপক্ষ সাউথ আফ্রিকা। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুর ম্যাচে তার জ্বলে ওঠার যে স্বাভাবিকতা, সেই ধারা বজায় রাখলে ইংল্যান্ডেও উড়তে পারে বাংলাদেশের বিজয় পতাকা। ১৯৮ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে সাড়ে ৫ হাজারের উপরে রান, একটি কম আড়াইশ উইকেট দখলে, এই সাকিব তো আরও পরিণত, আরও পরীক্ষিত। সেই সাকিবের কাছে নিশ্চয় আরও বেশিকিছুরই প্রত্যাশা থাকবে।