ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে নেয়ার পেছনে বড় কারণ ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সাফল্য পাওয়া। কিন্তু জুভেন্টাসের স্বপ্ন আর বাস্তবের দ্বন্দ্ব শুরু টুর্নামেন্ট নকআউটে পৌঁছাতেই। সিআর সেভেন তাই ইতালির ক্লাবে প্রথম মৌসুমেই বড় চ্যালেঞ্জের সামনে।
মঙ্গলবার রাতে ‘ডু-অর-ডাই’ পরিস্থিতিতে রোনালদোকেই দরকার জুভদের। প্রথম লেগের ০-২তে হার কাটিয়ে উঠতে হবে তাদের। উল্টো দিকে, নিজেকে প্রমাণের জন্য এ রকম বড় মঞ্চ তো বেশি পাবেন না রোনালদো।
গত পাঁচ বছরে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। ডিয়েগো সিমিওনের দলের কড়া ডিফেন্স তছনছ করে তুরিনের সাদা-কালো জার্সিকে কি রোনালদো পৌঁছে দিতে পারবেন শেষ আটে?
পর্তুগিজ তারকা নিজে বিশ্বাস রাখছেন। জুভেন্টাস টিভিতে সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে রোনালদো তাঁতিয়েছেন সতীর্থ ও জুভ সমর্থকদের। তার ভাষায়, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই রাতগুলোই দুর্দান্ত। একটা দারুণ ম্যাচ খেলার জন্য আমাদের দল আত্মবিশ্বাসী। আমি নিজেও। আমি সমর্থকদের বলব, ইতিবাচক ভাবুন। বিশ্বাস রাখুন। কামব্যাকের জন্য তৈরি থাকুন।’
এখনো পর্যন্ত মৌসুমের সেরা কামব্যাক দেখিয়েছে আয়াক্স ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। যারা ঘরের মাঠে হেরেও শেষ আটে চলে গেছে যথাক্রমে রিয়াল মাদ্রিদ ও পিএসজিকে উড়িয়ে।
জুভ কোচ ম্যাস্সিমিলিয়ানো অ্যাল্লেগ্রি জানেন, এই ম্যাচ তার ক্যারিয়ারের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী কোচ হিসেবে তুরিনে একদিন রটছে পেপ গার্দিওলার নাম, তো পরদিনই জিনেদিন জিদানের। ম্যানচেস্টার সিটি কোচ গার্দিওলা উড়িয়ে দিয়েছেন, জুভের কোচ হওয়ার সম্ভাবনা। তারপরেই সোমবারের নতুন জল্পনা মৌসুম শেষেই অ্যাল্লেগ্রিকে সরিয়ে জুভের কোচ হবেন জিদান। তবে সেটাও ভেস্তে গেছে। সংকটময় সময়ে রিয়াল মাদ্রিদের ডাকে সারা দিয়ে আবার স্প্যানিশ জায়ান্টদের কোচ হয়েছেন জিজু।
এই পরিস্থিতিতে রোনালদোই তার মূলঅস্ত্র। অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে নামার আগেরদিন রোনালদোর মন্তব্য, ‘আমরা প্রথম লেগে ০-২তে হেরে যাব ভাবিনি। কিন্তু এবার যেকোনো ফল হতে পারে। ঘরের মাঠে, আমাদের সমর্থকদের সামনে আমরা দারুণ জবাব দিতে তৈরি।’
সাক্ষাতকারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পাশাপাশি বক্তব্য ছিল রোনালদোর নিজের সাফল্য নিয়েও। কী রহস্য তার সাফল্যের? সিআর সেভেনের কথায়, ‘কোনো গোপন কারণ নেই। শুধুই আমার দায়বদ্ধতা আর ফুটবলের প্রতি প্যাশন। আমি অন্য কোনো কিছুর থেকে ফুটবলটাই খেলতে সবচেয়ে ভালোবাসি। পর্তুগাল, ইংল্যান্ড আর স্পেনে খেলাটা উপভোগ করে এসেছি। এখন ইতালিতে করছি। আমার কাছে গোল করা আর দলকে জেতানোই আনন্দের।’
আরও একবার সেই আনন্দটাই পেতে চান সিআর সেভেন। জানেন, ইতালিতে তার তারকা ইমেজ হাজারগুণ বেড়ে যাবে যদি অ্যাটলেটিকো বাধা ঠেলে জুভকে শেষ আটে তুলতে পারেন।
অন্যদিকে, অ্যাল্লেগ্রির মতো চাপে নেই গার্দিওলা। তার ম্যানসিটি শালকের মাঠে গিয়ে ৩-২ জিতে এসেছিল। মঙ্গলবার সিটির ঘরের মাঠে কোনো অঘটনের আশা করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবু সতর্ক থাকতে চান গার্দিওলা।
ম্যাচের আগের দিন প্রেস মিটে তার বক্তব্য, ‘দ্বিতীয় লেগ না হওয়া পর্যন্ত কেউ জানে না কোন দল পরের রাউন্ডে যাবে। পিএসজি আর রিয়াল মাদ্রিদ ছিটকে যাবে কেউ ভাবেনি। কিন্তু সেটাই হয়েছে। ম্যাচে অনেককিছু হতে পারে। লাল কার্ড হয়ে যেতে পারে। আমি নিজেদের ভাগ্যবান মনে করি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই পর্যন্ত আসতে পেরে।’