বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যবাহী একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্ম নেয়া সংগ্রামী ঐতিহ্যের পতাকাবাহী, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠন আওয়ামী লীগ ৬৭ বছরের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় একটি আদর্শ – একটি বিশ্বাস – একটি চেতনা ও মূল্যবোধে পরিণত হয়েছে। যে সংগঠনটি বাঙালি জাতিকে তার আদর্শে অনুপ্রাণিত – চেতনায় উজ্জীবিত আর নীতিকে বিশ্বাসে পরিণত করে নিজস্ব জাতি-রাষ্ট্র গঠনের মন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ করার মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, আওয়ামী লীগ আদর্শে গণতান্ত্রিক, নীতিতে ধর্মনিরপেক্ষ, চেতনায় জাতীয়তাবাদী, মূল্যবোধে সমাজতান্ত্রিক। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র – আওয়ামী লীগের এই চার মূলনীতি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধান স্তম্ভ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার, ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার, ধর্ম পালনের অধিকার এবং শোষণ-বঞ্চনা ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
প্রতিষ্ঠার পরপরই আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ও কারাবরণের মধ্য দিয়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ জোরাল হয়ে ওঠা রাষ্ট্রভাষা ভাষা বাংলার দাবিকে দলীয় কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে সংগঠনটি। এরপর ’৪৯-এর ১১ অক্টোবর খাদ্য মিছিল, ’৫০-এর ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে সাত রাজবন্দিকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ, ’৫০-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবিরোধী কর্মসূচি এবং ’৫২-র ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার তিন বছরেই বাংলার আপামর জনতার সংগঠনে পরিণত হয় আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন বাঙালির আত্মপরিচয় ও আত্মজাগরণের আন্দোলনে পরিণত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন ও গণতন্ত্রের দাবি সংবলিত ২১-দফা দাবি পেশ করে আওয়ামী লীগ। পরবর্তীতে যা যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী কর্মসূচি হিসেবে গৃহীত হয়। এ সময় দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ বাদ দেওয়ার প্রস্তাব উঠলেও খন্দকার মোশতাকসহ অনেকের বিরোধিতার কারণে পাস করা সম্ভব হয়নি। ১৯৫৫ সালের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের প্রগতিশীল চিন্তাধারা সমগ্র বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করায় ’৫৪-এর নির্বাচনে বাংলার জনগণ ২১-দফার পক্ষে রায় দিলে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে যুক্তফ্রন্ট। অভ্যন্তরীণ অন্তর্কোন্দলে যুক্তফ্রন্ট ভেঙে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে ’৫৬-এর ৬ সেপ্টেম্বর আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলায় মন্ত্রিসভা গঠন করে আওয়ামী লীগ। ১২ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের কেন্দ্রেও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। কেন্দ্রে ও পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগ শাসনামলে পাকিস্তানে গণতন্ত্র বিকাশের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এ সময় আওয়ামী লীগকে আরও গণমুখী করতে শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে সাংগঠনিক কাজে আত্মনিয়োগ করেন।
’৫৮-এর ৭ অক্টোবর সামরিক অভ্যুত্থানের পর সংবিধান, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা বাতিল এবং রাজনৈতিক দল ও কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শেখ মুজিবসহ অসংখ্য রাজনীতিবিদকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬২ সালে মৌলিক গণতন্ত্রের নামে আইয়ুব খানের একতরফা গণভোটে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে আওয়ামী লীগ। ’৬২-এর ৪ অক্টোবর অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের আলাদাভাবে পুনরুজ্জীবিত না করে ‘ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’ এনডিএফ নামে একটি ঐক্যবদ্ধ জোট গড়ে তোলে। এরপর ’৬৪-এর ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত করার সিদ্ধান্ত হয়। ৫ জুন পুনরুজ্জীবিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ১১-দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। ১১-দফা দাবি কার্যত ঐতিহাসিক ৬-দফা দাবির ভিত্তি রচনা করে।
’৬৪-এর ২৬ জুলাই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গঠিত কম্বাইন্ড অপোজিশন পার্টি (কপ)-এ যোগদান করে আওয়ামী লীগ। কপ-এর প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে দেশজুড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালায় দলটি। ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হলে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে দলটি। ‘পূর্ব পাকিস্তান রুখিয়া দাঁড়াও’ শিরোনামে লিফলেট বিতরণ করে ব্যাপক মানবিক আবেদন সৃষ্টি করে।
পাকিস্তানের শোষণ-বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ’৬৬-এর ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ৬-দফা কর্মসূচি উত্থাপন করেন। পরবর্তীতে সাড়ে সাত কোটি মানুষের ইশতেহারে পরিণত হয় বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা কর্মসূচি। এরই ধারাবাহিকতায় ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১১-দফা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ’৭০-এর নির্বাচনে গণচেতনার ইশতেহারে পরিণত হয় আওয়ামী লীগ।
’৭০-এর ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব বাংলায় ১৬৪টি সাধারণ আসনের মধ্যে ১৬২ আসনে এবং ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক নির্বাচনে ৩১০টি আসনের মধ্যে ২৮৭ আসনে জয়লাভ করে সারা পাকিস্তানে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিকজান্তা জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করে বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকারকে গলা টিপে হত্যা করে। জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার্জনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে দুর্বার আন্দোলন। গণতান্ত্রিক আন্দোলন রূপান্তরিত হয় স্বাধীনতা সংগ্রামে। মহান মুক্তিসংগ্রামের ইশতেহারে পরিণত হয় আওয়ামী লীগের মূলনীতি – গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা।
’৭১-এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় চূড়ান্ত সংগ্রামের আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা করেন – ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ২৫ মার্চ কালরাতে পাকবাহিনী নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করলে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ১০ এপ্রিল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এই সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
’৭২-এর সংবিধানে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র। আওয়ামী লীগ তার মূলনীতি গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে ’৭৩-এ নির্বাচন ঘোষণা করলে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩টি আসন এবং ৭৩.১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করে। বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা, ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা অতঃপর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিয়ে যায় খুনি-শাসকগোষ্ঠী।
১৫ আগস্ট পরবর্তী শাসকরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কারাগারে আটক, অত্যাচার-নির্যাতন, আওয়ামী লীগ ভাঙার চেষ্টা, নিষিদ্ধকরণ, পাল্টা আওয়ামী গঠন, নানা তৎপরতার মধ্য দিয়ে সংগঠনটিকে নিঃশেষ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা আওয়ামী লীগের আদর্শ, চেতনা ও মূল্যবোধের সাথে জনগণের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কে চিঁড় ধরাতে পারেনি। চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আওয়ামী লীগ তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চরম বৈরী পরিবেশ ও স্বৈরশাসনামলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে।
সামরিক শাসন, কারাবন্দি নেতাকর্মী, দলে ভাঙন – এমন বিরূপ পরিস্থিতিতেও ’৭৮-এর ৩ জুনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ‘গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটে’র অন্তর্ভুক্ত হয়ে জেনারেল ওসমানির পক্ষে ভোটযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও কারচুপির শিকার হওয়ার পরও ’৭৯-এর ১৮ ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে দলটি। ভঙ্গুর দল নিয়েও সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩৯টি আসন লাভ করে। সংসদে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখে।
১৯৮১ সালের ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ভাঙনোন্মুখ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দীর্ঘ ছয় বছরের নির্বাসন জীবন শেষে ১৭ মে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু-কন্যার নেতৃত্বেই গতি ফিরে পায় আওয়ামী লীগ। স্বদেশ প্রত্যার্বতনের পর তিনি স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৮৬-এর ৭ মে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫ দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনকে আরও গতিশীল করে তোলে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হয় জেনারেল এরশাদ। প্রকৃতপক্ষে, গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের আত্মত্যাগের মানসিকতা স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছিল।
১৯৯১-এর কারচুপির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার বিএনপি। এ সময় দীর্ঘদিন বিরোধী দলে থেকে শত অত্যাচার-নিপীড়ন, অন্যায়-অত্যাচার, জেল-জুলুম সহ্য করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখে আওয়ামী লীগ। গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামানুরক্ত পথ-পরিক্রমায় গণতান্ত্রিক আদর্শ, ধর্মনিরপেক্ষ নীতি, জাতীয়তাবাদী চেতনা আর সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রশ্নে কখনো সামান্য ছাড় দেয়নি আওয়ামী লীগ।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনী নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করলে সকল সংকীর্ণতা জয় করে সাফল্যের পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু ২০০১ সালের একাত্তরের ঘাতক জামাত-শিবিরকে সাথে নিয়ে খালেদা জিয়ার ষড়যন্ত্রের রাজনীতির কাছে হোঁচট খায় আওয়ামী লীগ। রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় যুদ্ধাপরাধীরা। বিএনপি-জামাত আমলে অত্যাচারের খড়গ নেমে আসে আওয়ামী লীগের ওপর।
২০০৮ সালের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক আসনে জয়লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের গত সাত বছরে উন্নয়ন স্রোতে সমৃদ্ধির নবতরঙ্গে জেগে ওঠা সম্ভাবনার আলোকোজ্জ্বল ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে এখন বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে এখন একসাথে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আওয়ামী বিরোধীদের ষড়যন্ত্র ও জঙ্গিবাদ দমনে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। একই সাথে দলে অনুপ্রবেশকারী এবং তরুণ নেতৃত্বকে সংগঠনের মূলনীতি, আদর্শ ও চেতনায় উজ্জ্বীবিত করে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। সংকট মোকাবিলায় আওয়ামী লীগকেই সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগই পারে – আওয়ামী লীগই পারবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। একসময়ের দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করছে – উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)