কিছু দুষ্টলোক চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে অতিরঞ্জিত কথাবার্তা বলছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে চায়না নির্ভর প্রমাণ করা; যাতে যুক্তরাষ্ট্র অসন্তুষ্ট হয়।
বুধবার বিকেলে সিলেটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদেরকে এসব কথা বলেন তিনি ।
মোমেন বলেন, পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে কম ঋণ গ্রহণ করে থাকে। জিডিপির মাত্র ১৫-১৬ শতাংশ আমরা ঋণের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের মোট ঋণের মাত্র পাঁচ শতাংশ চীন থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি জাপান থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি এসব সংস্থা থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নেয়া হয়।’
শ্রীলঙ্কার দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ও এর সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশকে একই পাল্লায় তুলনা করা যায় না। কিছু দুষ্টলোক এই প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। শ্রীলঙ্কা কেবল পর্যটনের উপর নির্ভরশীল দেশ ছিল। আমাদের রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সের ধারে-কাছেও তাদের অবস্থান নেই। তাদের চেয়ে আমাদের সক্ষমতাও বেশি।’
‘‘এ বছর আমার দেশে ৪৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে। করোনার সময় ২৫ বিলিয়ন রেমিটেন্স এসেছে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করা ঠিক না।’’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বৃহস্পতিবার একাধিক সুখবর নিয়ে সফরে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের তারিখও চূড়ান্ত হতে পারে এ সফরে।
র্যাব কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভারতসহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মোমেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর কিছু ভালো খবর নিয়ে আসবেন বলে আশা করছি।’
ভারতের সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছি তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ জানাতে আসছেন। সফরকালে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকে তিস্তা, কুশিয়ারা নদীর পানি ইস্যু, ভবিষ্যৎ সহযোগিতা, বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি, সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।’
র্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নেয়া হবে। আগামীকাল এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। তারা আমাদের সহযোগিতা করতে পারে। অথবা কিভাবে কী করলে এর সমাধান হবে তা বলে দেবে।’
‘‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা দেখেছি, কিন্তু আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর মত মমতাময়ী নেতা আমি কোথাও দেখিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আজ পর্যন্ত কোনো মিটিং মিস করেননি। সব মিটিংয়েই তিনি উপস্থিত থেকেছেন। আগে যারা সরকার প্রধান ছিলেন শুনেছি তারা প্রায়ই মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকতেন। দেশের উন্নয়নে তিনি সবসময় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তার নিরলস প্রচেষ্ঠায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন সুন্দর বাংলাদেশ, সোনার বাংলা, যেখানে থাকবে না কোনো বৈষম্য। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’