চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

চালের দাম: পাইকারি আর খুচরা বাজারে ব্যবধান কত?

চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপান হয়েছে ধান। কিন্তু কৃষক তার ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তবে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভোক্তার গলা কেটে চালের দাম নিচ্ছে খুচরা বিক্রেতারা।

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এই চালের পাইকারি মূল্য ৪০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৪২ বা ৪৩ টাকা। অথচ কৃষক প্রতি কেজি ধানের মূল্য পাচ্ছে মাত্র ১৪ থেকে ১৫ টাকা।

খুচরা আর পাইকারি বাজারে চালের মূল্য হিসাব করে দেখা গেছে, পাইকারের চেয়ে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চালে অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে ১৬ থেকে ১৭ টাকা। বাজারে যেহেতু মিনিকেট চাল বেশি চলে তাই এই চালের মূল্য নিয়েই সাধারণত কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। তবে মানভেদে মোটা চাল  প্রতিকেজি ৪০ টাকার কম বেশি বিক্রি হচ্ছে।

চালের দামের বিষয়ে বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এবং বাবু বাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাওসার আলম খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে চালের দাম কমতির দিকে। বর্তমানে নতুন মিনিকেট প্রতি কেজি চাল ৪০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৪১ বা ৪২ টাকা দরে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আর পুরনো মিনিকেট ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

“খুচরা বাজারে চালের দাম যদি বেশি নিয়ে থাকে তাহলে আমি মনে করি তারা অন্যায় কাজ করছে, এতে সরকারের মনিটরিং করা উচিত।”

কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, একই বাজারে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি মিনিকেট চালের দামে ১০ থেকে ১২ টাকা ব্যবধান।

এই বাজারের পাইকারি দোকান জনপ্রিয় রাইস এজেন্সির বিক্রয়কর্মী আমির হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা বড় ব্যবসায়ী এবং মিল মালিকদের থেকে চাল এনে বিক্রি করি। যে দামে চাল আনা হয় তার চেয়ে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা টাকা ব্যবসা করি। কিন্তু খুচরা দোকান আমাদের থেকে নিয়ে একটু বেশি লাভে বিক্রি করে।’

চালের দামএই বাজারেরই খুচরা ব্যবসায়ী মানিক মিয়া ১০ কেজির প্যাকেটজাত এসিআই পিউর চাল বিক্রি করেন ৫৮০ টাকায়। সেই হিসেবে প্রতিকেজি চালর দাম পড়ে ৫৮ টাকা। দাম বেশি রাখার কারণ হিসেবে তিনি জানান, তার কেনা পড়ছে বেশি তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তবে খোলা মিনিকেট চালের কেজি ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। এই চালের পাইকারি মূল্য ৪০ থেকে ৪৪ টাকার মধ্যে হলে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা রাখেন কেন এর জবাবে তিনি বলেন, খুচরা বিক্রি করলে চালে ঘাটতি হয়, এদিক সেদিক পড়ে কিছু চাল নষ্ট হয়। কিছু আবার বাকি দেয়া লাগে। এসব বিষয় বিবেচনা করেই খুচরা পর্যায়ে চালের দাম একটু বেশি পড়ে যায়।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, মূলত মিল মালিকরাই চাল নিয়ে কারসাজি করে। তারা প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে চাল কিনে। কিন্তু মাঝে মাঝে চাল স্টক করে সংকট দেখিয়ে চালের দাম বাড়িয়ে দেয়। তাই এ বিষয়ে সরকারের নজরদারি বাড়ানো জরুরি বলে তিনি মনে করেন।