বুধবারের রাতের মতো কোনো রাত আগে দেখেনি রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকরা। সেই রিয়াল, যারা কিনা জিনেদিন জিদানের হাত ধরে জিতেছে টানা তিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুই লা লিগা শিরোপা। মাঠের খেলোয়াড়রা যেমনই হন না কেনো, ডাগআউটে জিদান নামটা ভরসা আর ভালোবাসারই।
সেই জিদান বুধবার রাতেও ছিলেন ডাগআউটে। ক্রমান্বয়ে চালিয়ে গেছেন নিজের ফুটবলীয় উর্বর, ক্ষুরধার মস্তিষ্ক নামের জিনিসটাকে। সবকিছুর শেষে ফলাফলে বুড়ো আঙুল দেখেছে রিয়াল সমর্থকরা। অর্থ, মেধা, প্রভাব-প্রতিপত্তিকে ধুলোতে মিশিয়ে আবেগ দিয়ে কোপা ডেল রেতে রিয়ালকে বিদায় করে মাটিতে নামিয়েছে আলকোয়ানো নামের তৃতীয় সারির এক দল!
ফুটবলে খারাপ সময় আসেই। রিয়ালও তেমন এক সময় পার করছে। আগে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের কাছে হেরে স্প্যানিশ সুপার কাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায়, ওসাসুনার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র অন্তত মানা যায়। কিন্তু তৃতীয় সারির আলকায়ানোর বিপক্ষে ২-১ গোলে হার, সেটিও আবার দশ জনের একটা দলের বিপক্ষে! খারাপ সময়, বাজে পারফরম্যান্স- সবকিছুকে অজুহাত বানিয়ে এখন জিদানের বিদায় প্রধান দাবি হয়ে উঠেছে রিয়াল সমর্থকদের জন্য।
সময় খারাপ গেলে একটি ছোট ভুলও পাহাড়ের মতো দেখায়। জিদানের ক্ষেত্রেও ঘটেছে তেমনকিছু। ম্যাচে একাধিক পরিবর্তন এনেছেন, কিন্তু যাদের নামালেন তারা কেউই এনে দিতে পারলেন না সাফল্য। আলভারো অদ্রিওজোলা আর মারিয়ানো ডিয়াজদের পাত্তা দেননি ফ্রান্সের ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
উল্টোদিকে নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে লড়েছে আলকায়ানো। এডের মিলিতাওয়ের গোলে এগিয়ে থাকা রিয়ালকে এক গোল শোধ দেন হোসে সোলবেস, সেটাও ৮০ মিনিটে। ১০৯ মিনিটে র্যামন লোপেজ লাল কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আলকায়ানো। তার ৬ মিনিট পর রিয়ালকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় হুয়ানানের গোল।
এমন এক ম্যাচের পর রিয়ালের ডাগআউটে থাকতে পারবেন কিনা, জিদানের দিকে প্রশ্ন এসেছিল সংবাদ সম্মেলনে। জবাবে জিজুর উত্তরটা ছিল, ‘মনে হয়, তবে আপনারা চাইলে খেলোয়াড়দের জিজ্ঞেস করতে পারেন যে আমার দিকে তাদের সমর্থন আছে কিনা!’
‘হারলে সবাই কথা বলবেই। যা হয়েছে, ভবিষ্যতে যা হবে, তার জন্য সমস্ত দায় আমার। আমি ঠিক আছি, খেলোয়াড়রা খুব করে ম্যাচটা জিততে চেয়েছিল। তারা চেষ্টা করে গেছে। তবে কিছু সময় ভিন্ন কিছু ঘটেই।’