চলে গেলেন কবি, মুক্তিযোদ্ধা ও সম্পাদক রফিক আজাদ। রাজধানীর একটি হাসপাতালে আজ দুপুরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কবি রফিক আজাদ দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, কিডনি ও ফুসফুস জটিলতায় ভুগছিলেন।
৭৪ বছর বয়সী কবি গত ১৪ জানুয়ারি রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের ভর্তি হয়েছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় ৫৮ দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার পর ভালোবাসার পৃথিবী থেকে চলে গেলেন ভালোবাসার কবি। তার মৃত্যর খবরে শোকাচ্ছন দেশের শিল্প-সংস্কৃতি আর সাহিত্য অঙ্গন।
সর্বসাধারনের শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তার মরদেহ কেন্দ্রী শহীদ মিনারে রাখা হবে। ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত বাংলা একাডেমিতে রাখার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হবে নামাজে জানাযা। পরে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে অন্তিম শয়ানে শায়িত হবেন কবি রফিক আজাদ।
কবি রফিক আজাদের ছেলে থাকেন কানাডাতে। তার জন্য এই অপেক্ষা। কবি রফিক আজাদের মরদেহ রাখা হয়েছে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে।
রফিক আজাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রফিক আজাদ ১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার গুণী গ্রামের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সলিম উদ্দিন খান এবং মা রাবেয়া খান। তৃতীয় শ্রেণীতে থাকা অবস্থায়ই মা-বাবার শাসনকে উপেক্ষা করে শহীদদের স্মরণে খালি পায়ে মিছিল করেছেন।
অসম্ভবের পায়ে, সীমিত সবুজে, সীমাবদ্ধ জলে, চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। ভাষা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৮১ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। ২০১৩ সালে ভূষিত হন একুশে পদকে।
কবি বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা উত্তরাধিকার এর সম্পাদক ছিলেন। একাত্তরের রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করা রফিক আজাদ কখনো ‘ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিত্র খাবো’ লিখে দ্রোহী হয়েছেন। কখনো ‘যদি ভালোবাসা পাই আবার শুধরে নেবো জীবনের ভুলগুলি‘ লিখে জোছনায় সমর্পিত হয়ে উদযাপন করেছেন তীব্র কুসুমিত আলোকমালা।
তার লেখা বইগুলো হলো: অসম্ভবের পায়ে, সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে, চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া, পাগলা গারদ থেকে প্রেমিকার চিঠি, প্রেমের কবিতাসমগ্র ইত্যাদি।