চলচ্চিত্র শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক যে এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে, সেখান থেকে অর্থ নেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে চুক্তি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার এই নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে অর্থ নেয়ার জন্য ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন এর সাথে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি করতে হবে।
এছাড়াও কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। যেমন- এই স্কিমের আওতায় গ্রাহককে ঋণ দেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে সংযোজনী-ক এর মাধ্যমে ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন এর নিকট থেকে তহবিল পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে।
তহবিল পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে গ্রাহকের অনুকূলে ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ সম্পন্ন করে সংযোজনী-খ এর মাধ্যমে ওই ডিপার্টমেন্টে পুনঃঅর্থায়নের জন্য আবেদন করতে হবে।
ব্যাংককে প্রত্যেক গ্রাহকের জন্য ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে গৃহীত প্রথম কিস্তির তারিখ হতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়নের মেয়াদ ও গ্রেস পিরিয়ড হিসাবায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে পুনঃঅর্থায়নের অর্থ প্রথম কিস্তির মেয়াদ হতে এক বছর সময়সীমার মধ্যে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
গ্রেস পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে আরোপিত সুদ ঋণের অবশিষ্ট মেয়াদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করে আদায় করা হবে। সুদসহ পুনঃঅর্থায়নের অর্থ ২৮টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব থেকে আদায় করা হবে।
স্কিমের আওতায় গৃহীত অর্থ মেয়াদপূর্ব সম্পূর্ণ সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কোন অতিরিক্ত অর্থ কাটা হবে না এবং তফসিলি ব্যাংকও গ্রাহকের নিকট হতে কোন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে পারবে না। ব্যাংক কর্তৃক আংশিক সমন্বয়ের কোন সুযোগ থাকবে না।
স্কিমের আওতায় গৃহীত অর্থের উপর সাধারণভাবে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সুদ আরোপ ও আদায় করা হবে। তবে, মেয়াদপূর্ব সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক ভগ্নাংশের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে অর্থ জমা হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত দৈনিক ভিত্তিতে সুদ আদায় করা হবে।
পুনঃঅর্থায়নের আবেদনের সাথে যেসব দলিল দাখিল করতে হবে
বিতরণকৃত ঋণ সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গ্রাহকের সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা সরেজমিনে পরিদর্শন করবে। এক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতার বিষয়ে গ্রাহকের নিকট হতে অঙ্গীকারনামা নিতে হবে।
প্রত্যেক গ্রাহকের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রাপ্যতা অনুযায়ী সম্পূর্ণ আসলসহ সুদের পরিমাণের উপর সংযোজনী-গ অনুযায়ী ডিমান্ড প্রমিসরি নোট দিতে হবে।
ঋণ মঞ্জুরের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তসহ প্রধান ঝুঁকি কর্মকর্তার সম্মতিপত্রের অনুলিপি ও মঞ্জুরিপত্র থাকতে হবে।
গ্রাহকের সর্বশেষ সিআইবি প্রতিবেদনের অনুলিপি সরবরাহ করতে হবে।
অর্থ বিতরণের প্রমাণস্বরূপ সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবের সত্যায়িত অনুলিপি দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে বর্ণিত স্কিমের অধীনে অংশগ্রহণ চুক্তি স্বাক্ষরকারী ব্যাংককে প্রতি ত্রৈমাসিক অন্তর অন্তর চতুর্থ মাসের ১৫ দিনের মধ্যে গ্রাহকের ব্যবসার সর্বশেষ পরিস্থিতি (প্রকল্প বাস্তবায়নের অবস্থা, ব্যবসায়ের আয় পরিস্থিতি এবং ব্যাংকের দায় পরিশোধ ইত্যাদি) সম্বলিত একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই ডিপার্টমেন্টে দাখিল করতে হবে।
এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্রের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সিনেমা হলগুলোর জন্য এক হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে সিনেমা হল সংস্কার, আধুনিকায়ন ও নতুন হল নির্মাণে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়া যাবে।
এ তহবিল থেকে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেড় শতাংশ হারে পুনঃ অর্থায়ন সুবিধা নিতে পারবে। আর বিভাগীয় শহরের জন্য সুদহার হবে ৫ শতাংশ ও অন্যান্য এলাকায় সাড়ে ৪ শতাংশ।