চলচ্চিত্র নির্মাণ কমে যাওয়ায় অনেকের হাতে কাজ নেই। অনেক শিল্পী বেকার! বিশেষ করে নবীন অনেক শিল্পীর কোনো ব্যস্ততা নেই বললেই চলে। অনর্থক বসে না থেকে চলচ্চিত্রের অনেক শিল্পী তাই ঝুঁকছেন টেলিভিশন নাটকে।
আবার পপি, পরীমনি, আঁচল, জলি, বিপাশা কবিররা কাজ করছেন ওয়েব সিরিজে। বিশেষ দিবসের নাটকে পাওয়া যায় পূর্ণিমা, ইমন, তমা মির্জা’র মতো দু-একজনকে। এ প্রজন্মের কায়েস আরজু, আসিফ ইমরোজ, তানহা তাসনিয়া তিনজনই চলচ্চিত্রের ‘নবীন শিল্পী’ হিসেবে পরিচিত। প্রত্যেকের আলাদা আলাদা করে ছবি মুক্তি পেয়েছে। নামের আগে লেগেছে চিত্রনায়ক ও চিত্রনায়িকার তকমা! অথচ পরিস্থিতির মারপেঁচে পড়ে তারাও ভিড়ছেন ছোটপর্দায়। নাটকে কাজ করলে দর্শকের কাছে চলচ্চিত্র শিল্পীদের আবেদন কমে যায়, এমন প্রচলিত উক্তিকেও থুরাই কেয়ার করছেন তারা!
আগামীতে নাটকে কাজের ইচ্ছে আছে: কায়েস আরজু
বিয়ের বাজনা, অবুঝ প্রেম, হেডমাস্টার, ভালোবাসার গল্প, তুমি আছো হৃদয়ে সহ আটটি ছবি মুক্তি পেয়েছে চিত্রনায়ক কায়েস আরজুর। মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ ছবিটি। শোনা যাচ্ছে ডিসেম্বর মাসেই ছবিটি মুক্তি পাবে। এই চিত্রনায়ক গত সোমবার(৫ নভেম্বর) একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন, নাম ‘বিসর্জন’।
কায়েস আরজু বলেন, নাটকের পরিচালকের অনুরোধে কাজটি করেছি। তিনি অনেকদিন আগ থেকেই চাচ্ছিলেন আমি নাটকে কাজ করি। আগামীতে নাটকে কাজের ইচ্ছে আছে। তবে নিয়মিত যে করব এমনটা নয়। যদি ভালো চরিত্র পাই, বিশেষ কোনো আকর্ষণ থাকে তাহলেই নাটকে কাজ করবো। সালমান শাহ কিন্তু সিনেমা ছাড়া নাটকেও কাজ করেছেন। সুতরাং নাটক করলে সিনেমার দর্শক গ্রহণ করবে না এটা ভুল ভাবনা। সবকিছুর উপরে একজন অভিনেতার সব কাজই করা উচিত।
ভালো সিনেমা পেলে সবকিছু ফেলে আবার সিনেমাই করবো: তানহা তাসনিয়া
‘ভোলা তো যায়না তারে’ ছবি দিয়ে আলোচনায় আসেন তানহা তাসনিয়া। এরপর শাকিব খানের ‘ধূমকেতু’ ছবিতে ছিল তার উপস্থিতি। সর্বশেষ আরিফিন শুভ’র সঙ্গে ভালো থেকো ছবিতে অভিনয় করে নতুন করে আলোচনায় এসেছিলেন। টুকটাক বিজ্ঞাপন ও বিলবোর্ড মডেল হিসেবে দেখা গেলেও তানহা তাসনিয়া সম্প্রতি একটি নাটকে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে। সিনেম্যাটিক গল্প নিয়ে নির্মিত এই নাটকের নাম ‘গল্পগুলো সিনেমার’। তার আগে ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’ নামে একটি ধারাবাহিকে কাজ করেছেন।
সিনেমা নির্মাণ কমে গেছে। শাকিব খান ছাড়া নিয়মিত কেউ করছেন? নিজেকে ব্যস্ত রাখার মতো কিছু করা লাগবে। একটা নায়িকার ক্যারিয়ার কয় বছর থাকে? অনেকদিন বসে ছিলাম। সিনেমা পেলাম না। ধৈর্য্য কুলাতে না পেরে নাটকে কাজ শুরু করলাম। আমি সিনেমার মানুষ। সিনেমার প্রতি আমার ভালোবাসা সবার আগে। ভালো সিনেমা পেলে সবকিছু ফেলে আবার সিনেমাই করবো। দিনশেষে ভালোমতো বাঁচতে গেলে টাকা লাগে। কাজ না করলে টাকা আসবে কোথা থেকে? অভিনয়টাও চর্চা থাকা দরকার। এজন্য ভালো গল্প পেলে নাটক, মিউজিক ভিডিও করবো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নাটকে কাজ করলে ফিল্মে চাহিদা কমে যায় এই কথাটার সঙ্গে আমি একমত নই। চঞ্চল চৌধুরী কিন্তু নিয়মিত নাটক করছেন। কিন্তু তার সবগুলো ছবিই হিট।
নাটক-সিনেমা দুই মাধ্যমেই কাজ করবো: আফিস ইমরোজ
২০০৯ সালে ‘সুপারহিরো-সুপারহিরোইন’ প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন আসিফ ইমরোজ। এরপর অসংখ্য নাটকের কাজে প্রস্তাব পেলেও এড়িয়ে গিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল চলচ্চিত্রে কাজ করবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ হয় ‘দবির সাহেবের সংসার’ ছবির মাধ্যমে। এরপর মায়ানগর, ভালো থেকো, ময়না পাখির সংসার, কাঁচা লঙ্কা ছবিগুলোতে কাজ করেন। এরমধ্যে মুক্তি সর্বশেষ মুক্তি পেয়েছে ‘ভালো থেকো’। বাকিগুলো মুক্তির অপেক্ষায় এবং নির্মাণাধীন।
মিউজিক ভিডিওর পর গেল ঈদুল আযহায় প্রচার হয়েছে আসিফ ইমরোজ অভিনীত ‘আকাশে মেঘের ভেলা’ নামের একটি নাটক। এরপর ‘নয়ন তারা’ নামের আরেকটি নাটকে কাজ করেছেন। আসিফ ইমরোজ বলেন, আগে নাটকে কাজ করতাম না। কারণ, সিনেমার মানুষজন নাটকে কাজ করতে নিষেধ করতেন। ২০১০ সালে আড়াই শো পর্বের নাটকে অফার পেয়েও ছেড়ে দিয়েছিলাম ফিল্ম করবো বলে। তখন তো আর ভাবিনি সিনেমার অবস্থা এত খারাপ হবে। এখন মনে হচ্ছে, নাটকে কাজ করলেও ফিল্ম ক্যারিয়ারে সমস্যা হবে না।
নাটক-সিনেমা দুই মাধ্যমেই কাজ করবো। অনেকেই ওয়েব সিরিজ করছেন। এটাও ভালো। কাজ তো করতে হবে। মার্কেটে চেহারা দেখাতে হবে। নইলে মানুষ ভুলে যাবে। চেষ্টা করছি ভালো ভালো নাটকে করার। কিছু নাটকে কাজের কথা চলছে। নতুন অনেকেই সিনেমায় এখন টাকা দিয়ে হিরো হচ্ছে। মানে সে নিজেই বিনিয়োগকারী (প্রযোজক) হচ্ছে। পরিচালক তাকেই কাস্ট করছেন। তাহলে আমাকে কেন নেবে? আর আমার তো টাকা দিয়ে ছবি করার সামর্থ্য নেই।