চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে পিএসজির কাছে ৩-০ গোলে হারের পর চরম চাপে আছেন জিনেদিন জিদান। ইএসপিএন এফসি যখন ফরাসি কিংবদন্তির চাপের কথা নিশ্চিত করেছে, ঠিক তখনই অন্য মিডিয়া জানাচ্ছে জিজুর উত্তরসূরি তালাশে নেমেছে রিয়াল।
টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের পর আচমকাই ২০১৮তে কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান জিদান। কিন্তু করুণ পরিস্থিতিতে দলের ডাকে সাড়া দিয়ে মাস সাতেক বাদেই আবার নিজের চেয়ারে ফেরেন। এই অল্প সময়ে অবশ্য হুলেন লোপেতেগি ও সান্টিয়াগো সোলারিকে বরখাস্ত করে রিয়াল।
ফরাসি সাবেক তারকা এখন নিজের ভাগ্য আগের জায়গায় ফেরাতে লড়াই করছেন। দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব নেয়ার পর গত মৌসুমে তার ১১টি ম্যাচের মধ্য মাত্র পাঁচটি ম্যাচ জেতে দল। এই গ্রীষ্মে মাদ্রিদ ছয়জন খেলোয়াড়কে সই করিয়েছে, তা সত্ত্বেও ক্লাব সূত্রগুলো ইএসপিএন এফসিকে জানায়, ক্লাবের বোর্ড সদস্যরা মনে করেন ‘স্কোয়াডটি খুব শক্তিশালী, তবে সর্বোচ্চ না।’
তবে ইএসপিএন এফসি সূত্রের খবর, পিএসজির কাছে উদ্বেগজনক পরাজয় সত্ত্বেও জিদান ক্লাবের পরিস্থিতি নিয়ে ‘আশাবাদী’।
মাদ্রিদ এডার মিলিটাও, এডেন হ্যাজার্ড, ফারল্যান্ড মেন্ডি, লুকা জোভিচ, রড্রিগো এবং আলবার্তো সোরোকে সই করিয়েছে। তাছাড়া বায়ার্ন মিউনিখে ধারে দেয়া জেমস রদ্রিগেজকেও দুই বছর পর ফিরিয়ে এনেছে। তবে তারা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার পল পগবাকে সই করতে ব্যর্থ হয়, যিনি জিদানের এক নম্বর পছন্দ ছিলেন এবং ক্লাবের মাঝ মাঠেও খামতি রয়েছে।
ক্লাব সূত্রগুলো ইএসপিএন এফসিকে জানিয়েছে যে, ড্রেসিংরুমের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা বিশ্বাস করেন জিদান ‘আগের মতো নেই’ এবং সম্ভবত জোসে মরিনহোকে নিয়ে সম্ভাব্য প্রতিস্থাপনের গুজবে কিছু খেলোয়াড়ের মধ্যে একটা ভয়ও রয়েছে।
ইএসপিএন যখন মরিনহোর কথা জানাচ্ছে, তখন রিয়ালের কোচ তালাশের খাতায় আরও কয়েকজনের নাম দিচ্ছে স্প্যানিশ মিডিয়া।
মাদ্রিদভিত্তিক ক্রীড়া দৈনিক মার্কা বলছে, রিয়াল মাদ্রিদ যে বস হিসাবে জিদানের পরিবর্ত প্রার্থীদের শর্টলিস্ট করবে বা করছে সেটা খুব দীর্ঘ নয়। ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্টিনো পেরেজ যখন ডাগআউটে কোনো পরিবর্তন আনতে চান, তখন সাধারণত বাইরে বা রিয়াল ক্যাস্তিলা থেকে কোচদের খুঁজে বের করেন।
এই মানদণ্ড ব্যবহার করে রিয়ালের ডাগআউটে জিদানের পরিবর্ত হিসেবে মার্কা তিনজন প্রতিযোগীর কথা তুলে ধরেছে। যেখানে আছেন মরিনহো, মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি ও রাউল গঞ্জালেস।
এই তিনজনের মধ্যে মরিনহো এখন চাকরিহীন। ম্যানইউ থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর থেকেই ফাঁকা তিনি। আর ২০১৮তে জিদান সরে দাঁড়ানোর পর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী ছিলেন আলেগ্রি। তিনি জুভেন্টাস থেকে দায়িত্ব ছেড়ে এখন কর্মহীন।
জুভদের সাবেক এই কোচের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বর্তমান ইন্টার মিলান কোচ অ্যান্থনিও কন্তে এবং টটেনহ্যাম হটস্পার কোচ মাউরিসিও পচেন্তিনো। কিন্তু সবাইকে টপকে রিয়ালের তপ্ত চেয়ারে বসে পড়েন স্পেনের সাবেক কোচ হুলেন লোপেতেগি।যদিও তার মেয়াদ মোটেও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
মার্কা বলছে, রিয়াল মাদ্রিদ সাবেক অধিনায়ক রাউলও জিদানের মতো একই পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারেন, যাকে ক্যাস্তিলা থেকে প্রথম দলে উন্নীত করা হয়েছিল যখন রাফায়েল বেনিতেজকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সোলারিকেও গত মৌসুমে লোপেতেগির পরিবর্ত হিসেবে ক্যাস্তিলা থেকেই ডেকে আনা হয়েছিল এবং এখন রাউলও তেমনি ক্লাবের পরের অংশ হতে পারে।
অন্যদিকে, মুন্ডো দেপোর্তিভো বলছে, জিদানের জায়গা পূরণে ক্লাবের সাবেক তারকা ও রিয়ালের যুব প্রকল্পের খেলোয়াড় জাভি আলনসোর কথাও চিন্তা করছেন পেরেজ।
মুন্ডোর খবর অনুযায়ী, রিয়াল প্রেসিডেন্ট তার এক আত্মীয়কে বলেছিলেন যে, ক্লাব জাভি আলনসোকে ক্যাস্তিলা থেকে রিয়াল সোসিয়েদাদে যেতে দিয়ে ভুল করেছিলেন এবং মাদ্রিদেই গড়ে ওঠা রাউলের চেয়েও তিনি রিয়ালের দায়িত্ব গ্রহণের পক্ষে পছন্দনীয়।’
এরা ছাড়াও তালিকায় নাম আছে হোসে মরিনহোর সহকারী আইতর কারাঙ্কার।
চাপের মধ্যেই আগামী রোববার মাদ্রিদ ডার্বিতে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে মাঠে নামবে জিদানের দল। সপ্তাহের মাঝখানে তাদের পরের ম্যাচ ওসাসুনার বিপক্ষে, যারা আগের ম্যাচেই বার্সেলোনাকে ড্র’য়ের ফাঁদে ফেলেছিল।