চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ওষুধ কারখানা বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা

দীর্ঘদিন লোকসানে থাকায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশে তাদের ওষুধ কারখানা বন্ধ করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে কারখানা বন্ধের এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম আজিজুল হক। এসময় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নকিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এম আজিজুল হক বলেন: একটি ব্যবসায়িক পর্যালোচনা শেষে জিএসকে বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে কোম্পানিটির ওষুধ উৎপাদনকারী ইউনিট সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জিএসকের লোকসান হওয়ায় ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার প্রস্তাব গৃহীত হয়।

‘‘চলতি বছরের শেষদিকে এটি বন্ধ করা হবে। স্থানীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোর সাথে বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় এই সিদ্ধান্ত নেয় হয়। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম যথারীতি চলমান থাকবে।

তবে বাংলাদেশে জিএসকের কনজ্যুমার হেলথকেয়ার কার্যক্রম (হরলিকস ও গ্লকোজ জাতীয় পণ্য উৎপাদন) যথারীতি বহাল থাকবে। ফার্মাসিউটিক্যাল বিভাগের কারণে এতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। এছাড়া ইউনিসেফ এবং ভ্যাক্সিন অ্যালায়েন্স ‘গ্যাভি’র সহায়তায় পাওয়া জিএসকের টীকা (ভ্যাক্সিন) যথারীতি বাংলাদেশে পাওয়া যাবে।’’

এম আজিজুল হক বলেন: বাংলাদেশে ইতিমধ্যে একটি শক্তিশালী ও বহুমাত্রিক ফার্মাসিউটিক্যাল খাত গড়ে উঠেছে। বর্তমানে জিএসকে উৎপাদিত সবগুলো ওষুধেরই জেনেরিক বিকল্প সহজলভ্য হয়েছে। মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে গেছে। তাই সব ওষুধই পাওয়া যাবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এম আজিজুল হক বলেন: অবশ্যই তাদের সঙ্গে সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করা হবে। এছাড়া তাদের সম্ভাব্য সহযোগিতা করতে জিএসকে বদ্ধপরিকর। আগামী সপ্তাহ থেকেই তাদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

তবে কর্মীদের আর্থিক পাওনার বিষয়টি পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

তিনি বলেন: এখানে কর্মরত কর্মীদের মধ্যে যারা মোটামুটি যোগ্য ও দক্ষ তাদের অন্যত্র নেয়ার ব্যবস্থা করা হতে পারে। অন্যদের (আনুমানিক ২শ কর্মী) হয়তো তা করা সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি জিএসকের ওষুধ, ভ্যাকসিন এবং পুষ্টিকর খাদ্য বা স্বাস্থ্যসেবা পণ্যের ব্যবসা রয়েছে এদেশে। ১৯৭৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় জিএসকে। ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট শিল্প এলাকায় উৎপাদন শুরু করে কোম্পানিটি।