গ্রিসে বকেয়া বেতন চাওয়ায় মালিকের গুলির শিকার হওয়া ৪২ জন বাংলাদেশী স্ট্রবেরি চাষীর পক্ষে রায় দিয়েছেন ইউরোপীয়ান মানবাধিকার আদালত। ২০১৩ সালের ওই ঘটনায় আদালত বৃহস্পতিবার গ্রিস সরকারকে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।
দৃষ্টান্তমূলক ওই রায়ে মানব পাচার রোধ ব্যর্থ হওয়ার কারনে গ্রিস সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশীদের প্রত্যেককে ১৬শ ইউরো (প্রায় ১৪ লাখ টাকা) করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ক্ষতিপূরণের এই রায় এখন পর্যন্ত দেয়া ইউরোপিয়ান মানবাধিকার আদালতের সর্বোচ্চ রায়।
বাংলাদেশী চাষীদের পক্ষে কাজ করা বৃটিশ আইনজীবী সিমন কক্স এই রায়কে ইউরোপের জন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, ‘এই রায় শুধু কৃষকদের জন্য সুবিচারই নয়, এটি অবৈধ কৃষকদের শাস্তি থেকে বাঁচাতে রাষ্ট্রকেও বাধ্য করবে। এছাড়া শাস্তির ভয় দেখিয়ে অবৈধদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করার বিপক্ষেও এই রায় রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করবে।’
তবে গ্রিসের বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে। যাদের সময়ে বাংলাদেশী চাষীরা এই ঘটনার শিকার হয়েছিল তাদের চেয়ে দেশটির বর্তমান সরকার অবৈধ অভিবাসী এবং উদ্বাস্তুদের জন্য অনেক কাজ করছে বলেও ওই সূত্র জানায়।
২০১৩ সালে দক্ষিণ পেলোপোনেস শহরের একটি স্ট্রবেরি বাগানে কাজ করতন ৪২ জন বাংলাদেশী। ওই বাগানের মালিক জোর করে এবং দেশে ফেরত পাঠানোর ভয় দেখিয়ে তাদের কাজে বাধ্য করতো। ওই বছরের এপ্রিলে চাষীরা তাদের বকেয়া বেতন দাবি করলে মালিক বন্দুক নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এতে ৩০ জন অধিকবার গুলিবিদ্ধ হন। চারজন গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে একজন তিনদিন আইসিইউতে ছিলেন। অনেকেই মাসের পর পর মাস কাজ করতে পারেননি।
এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ইউরোপীয়ান আদালতে অভিযোগকারী মোরশেদ চৌধুরী বলেন, ‘গ্রিস সরকার এই রায় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং তাদের অর্থনীতিতে আমাদের গুরুত্ব উপলব্ধি করবে।’