সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে আমলারা গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর আত্মঘাতী প্রস্তাব দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
শনিবার (২১ মে) রাজধানীতে এফবিসিসিআই-এর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অস্থির সময়ে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে অর্থনীতিতে বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। গণশুনানীর পর ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাস এবং বিদ্যুৎ এর দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত। জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব কার্যকর হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে সার ও শিল্প-কারখানার উৎপাদন, এমনকি আবাসিক ব্যবহার- সবখানেই দাম বাড়বে কমপক্ষে ১১৭%। ব্যবসায়ী নেতাদের আপত্তি এখানেই। তারা বলছেন, চুরি, অব্যবস্থপনা এবং দক্ষতার উন্নতি করা গেলে দাম বাড়ানো দূরে থাক, উল্টো দাম কমানো সম্ভব।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে হবে রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে, আমলারা কোন কিছু চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে মানা হবে না।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনিতেই কাঁচামাল আমদানি ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ। তার ওপর যদি বিদ্যুৎ ও গ্যসের দাম বাড়ে তাহলে রপ্তানিতে প্রতিযোগিতায় টেকা কঠিন হবে বলে শংকা ব্যবসায়ীদের।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এই দুঃসময়ে পাইকারি পর্যায়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাবে বহুমাত্রিক মূল্যস্ফীতি উসকে দিয়ে এর বহুমুখী নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার উদ্ভব হবে। ফলে কৃষি, শিল্প, সেবা এবং সার্বিকভাবে সাধারণ জনগণের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে অচলাবস্থার সৃষ্টি করবে। সর্বোপরি, অর্থনৈতিক উন্নয়নের চলমান ধারা মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে।
অবৈধ গ্যাস লাইন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবৈধ গ্যাস লাইন বন্ধ করতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। এক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদেরও এগিয়ে আসতে হবে। না বুঝে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্যে এই প্রস্তাব (গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব) করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবটি আপাতত স্থগিত করে কোভিড এবং ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্বব্যাপী বিরাজমান সংকটময় পরিস্থিতি প্রশমিত হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে সাধারণ জনগনকে স্বস্তি দেয়ার পাশাপাশি শিল্পখাতের সক্ষমতা বজায় থাকবে। সার্বিক অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই সাথে আমরা জাতীয় ভিশন-২০৪১, এসডিজি ২০৩০ অর্জন ও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তখন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।