গাইবান্ধার ওই এলাকার (গাইবান্ধা-৪) আওয়ামী লীগের সাংসদ আবুল কালাম আজাদ ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আলম বুলবুলের নেতৃত্বে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাঁওতালদের ওপর হামলা চালানো হয়েছিলো বলে দাবি এলাকাবাসীর। অথচ এই বুলবুল একসময় সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার কমিটির সভাপতি ছিলেন!
এলাকাবাসীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকেই তার সুর পাল্টাতে থাকে। তিনি হয়ে ওঠেন এলাকার ত্রাস। ঢাকা থেকে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ইক্ষু খামার জমি উদ্ধার সংহতি কমিটি’র ৮ সদস্যের একটি দল সরেজমিনে গিয়ে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পায়। আজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সরেজমিনে পাওয়া এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুলবুল বর্তমানে এম.পি’র ডান হাত। যার নিয়ন্ত্রণে এম,পি’র ব্যক্তিগত অস্ত্র ভান্ডার রয়েছে! সাহেবগঞ্জ সাঁওতাল পল্লীতে হামলা চালানোর আগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে পল্লীর সবক’টি বাড়িতে লুটপাট এবং কাউকে ছাড় না দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলো এই বুলবুল।
স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় চেয়ারম্যান বুলবুলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সাহেবগঞ্জে আদিবাসী-বাঙালির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা পল্লীতে ৬’শ ঘর ও স্কুলে অগ্নিসংযোগ করে। এটি মোটেও আখ কাটতে গিয়ে বাধা দেয়ার ফলে সৃষ্ট কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়। পুলিশ প্রহরায় আখ কাটতে যাওয়ার কোন যুক্তি নেই। আদিবাসী-বাঙালিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার জন্যে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়’।
হামলায় প্রভাবশালীদের যোগসাজশ ছিলো জানিয়ে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই হামলায় পুলিশ ও সুগার মিলের ম্যানেজার আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বুলবুল ও তার মাস্তান বাহিনী মিলের শ্রমিকদের নাম ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে নিরস্ত্র আদাবাসী-বাঙালীদের উপর হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে’।
প্রশাসন নির্বিকার রয়েছে এবং সত্য অস্বীকার করছে দাবি সংহতি কমিটি জানায়, সেদিন মাঠে অন্তত পাঁচটি লাশ পড়ে ছিলো। কিন্তু পুলিশের ভয়ে কেউ লাশ নিতে পারেনি। ঘটনার একদিন পর পুলিশ তাদের দ্বিতীয় লাশটি (মঙ্গল মার্ডি) ফেলে যাওয়ার কারণে এবং অন্য লাশদের খোঁজ না পাওয়ার কারণে তাদের ধারণা পুলিশ এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীরা লাশগুলো গুম করে ফেলেছে’।
প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে একটি নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ইক্ষু খামার জমি উদ্ধার সংহতি কমিটি। তাদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মানবেতর জীবনেযাপনে বাধ্য হওয়া আদিবাসীদের পুনর্বাসনসহ সার্বিক সহায়তা দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।