টেলিযোগাযোগ খাতে বহু বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিভ্রাটের শিকার হয়েছে নেদারল্যান্ডস। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর ছিল যে, দেশের জরুরি সহায়তা নম্বর ১১২-ও এর কারণে বন্ধ ছিল।
বিবিসি জানায়, টানা চার ঘণ্টার এই সংযোগ বিভ্রাটের শুরু নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রীয় টেলিসেবা সংস্থা কেপিএন থেকে। কেপিএনের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত বাকি সব প্রোভাইডারও এর ফলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল।
প্রায় চার ঘণ্টা পর সংযোগ ব্যবস্থা ধীরে ধীরে সক্রিয় হতে থাকে।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া বা এত দীর্ঘ সময় বিচ্ছিন্ন থাকার কারণ এখনো স্পষ্ট নয় বললেও কেপিএন জানিয়েছে, কোনো হ্যাকিংয়ের কারণে এমনটা হয়নি বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এটা হ্যাকিং ছিল, এমনটা মনে করার কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাইনি। আমরা প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের সিস্টেম মনিটর করে থাকি।’
সংযোগ না থাকার কারণে কেপিএনে সংযুক্ত সব ল্যান্ডলাইন ও মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। কিন্তু সবচেয়ে বিপজ্জনক ছিল জাতীয় জরুরি সহায়তা লাইন ১১২ নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া।
পরিস্থিতি সামলাতে অবশ্য দেশটির জরুরি সহায়তা কেন্দ্র তাদের সামাজিক যোগাযোগ পেজগুলোতে বিকল্প একটি ফোন নম্বর দিয়ে রেখেছিল।
এছাড়া সম্ভাব্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে দেশজুড়ে বিভিন্ন সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পাশাপাশি যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি সহায়তা নম্বরে কল না করে সরাসরি হাসপাতাল, পুলিশ বা ফায়ার স্টেশনে চলে যাওয়ার অনুরোধ করেছিল সরকার।
তবে কীভাবে টানা এতটা সময় সংযোগ নিষ্ক্রিয় ছিল, জানতে চাওয়া হলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনপিও’কে কেপিএনের বোর্ড ডিরেকটর জুস্ট ফারওয়ের্ক বলেন, কোনো ধরনের কারিগরি ত্রুটি যেন না হয় সেজন্য আগেই পুরো নেটওয়ার্ক ব্যাকআপ করে রাখা হয়েছিল, অর্থাৎ পুরো নেটওয়ার্কের তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কারণে ব্যাকআপগুলো কাজ করেনি।
আসলে কী ঘটেছিল তার ব্যাখ্যা দিতে কেপিএন’কে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন বিচার ও নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ফার্দিনান্দ গ্র্যাপারহুইস।
কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী ম্যাক্সিমো ইবারা পদত্যাগ করছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। যদিও কেপিএন বারবারই জোর দিয়ে বলছে যে, টেলিযোগাযোগ বিভ্রাটের জন্য তারা কোনোভাবেই দায়ী নয়।