ঢাকা শহরে গাড়ির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে জ্যাম। এই অবস্থায় নিজস্ব গাড়িতে চলাচলকারীদের কিছু কিছু অবিবেচক আচরণের কারণেও জ্যামের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। তেমনই একটি ঘটনার বর্ণনা নিজের ফেসবুকে তুলে ধরলেন লেখক সাংবাদিক আরিফ জেবতিক।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, পিংক সিটি শপিংমলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। একটা গাড়ি এসে থামল। পেছনে অনেক লম্বা গাড়ির সারি। গাড়ির ড্রাইভার নামলেন, তারপর ঘুরে এসে গাড়ির অন্যপাশে এলেন। দরজা খুলে দিলেন। সেই দরজা দিয়ে গাড়ির মালকিন ধীরেসুস্থে নামলেন। অবাক হয়ে দেখলাম যে এই পুরো বিষয়টির কোনো দরকার ছিল না।
ভদ্রমহিলার হাতে কোনো ব্যাগ নেই, পোশাকে জবুথবু কোনো ব্যাপার নেই-উনি নিজে যদি চট করে দরজা খুলে নেমে যেতেন, তাহলে পেছনে জ্যাম লাগত না। কিন্তু তিনি অপেক্ষা করলেন ড্রাইভার এসে দরজা খুলে দেয়ার জন্য! এতে কী অহম উনার পূর্ণ হলো, আল্লাহ মালুম! এই কাহিনী আমি অহরহ দেখি। প্রয়োজন ছাড়া ড্রাইভারকে দিয়ে দরজা খুলিয়ে এরা কী আত্মতৃপ্তি পায় এটা একটা রহস্য!
এরপর আরেকটি ঘটনার বর্ণনা টেনে এই ব্লগার তার ফেসবুকে লিখেন, তারপর বনানীর রাস্তাঘাট এমনিতেই কেটেকুটে একসা। ধাই করে এক গাড়ি রাস্তার উপর থেমে গেল। এবারে মালিক অবশ্য নিজেই দরজা খুলে নামলেন। কিন্তু নেমে তারপর দরজা খোলা রেখেই সিট থেকে কাগজপত্র কী কী যেন নিয়ে ব্যাগে ঢুকাতে থাকলেন। পেছনে যে আমরা গাড়ির জ্যাম লাগিয়ে দিয়েছি সেই ব্যাপারে কোনো উদ্বেগ নেই। তো, ব্যাগে কাগজপত্র ঢুকানোর পরে মানিব্যাগ খুলে কিছু টাকা বের করলেন, সেই টাকা ড্রাইভারকে দিলেন। তারপর আস্তেধীরে পাশের বিল্ডিংয়ে ঢুকলেন। গাড়ির জ্যাম ছুটল।
সবশেষে তিনি লিখেন, রাগ উঠলে মাটির দিকে তাকাতে হয়-ছোটবেলা শিখেছি। আজকাল মাটির দিকে তাকালে কাদাপানি দেখে রাগ আরো চড়চড় করে উঠতে থাকে।
তবু দুইবারই রাগ সামলালাম।
আমরা বারবার বলি ড্রাইভারদেরকে লাইসেন্স দেয়ার আগে ড্রাইভিং শেখানো জরুরি। ট্রাস্ট মি, এই দেশে অনেক লোক আছে, গাড়ি কেনার আগে এদেরকে সিভিক সেন্স ট্রেনিং দেয়া দরকার।
গাড়ির মালিক হওয়ার আগে এদের জন্যও লাইসেন্স চালু করা এখন দরকারি হয়ে পড়েছে।