মজুরি-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আশুলিয়ার ৫৯টি গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে আবার তা খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের গার্মেন্টস সেক্টরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-কে পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে। কর্মবিরতির কারণে শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী গার্মেন্টস কারখানাগুলো বন্ধ করা হয়েছিল। ওই ধারাতে কারখানা বন্ধ থাকার ফলে বন্ধ থাকা সময়ের মজুরি পাবেন না শ্রমিকরা। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণার সময় জানিয়েছিলেন, নতুন কোন কারখানায় বিক্ষোভ হলে সেগুলোও বন্ধ করে দেয়া হবে। বিজিএমইএ সভাপতির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নানামহলে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের উচ্চ পর্যায় ও গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগে বিজিএমইএ’র মাধ্যমে বিষয়টির সাময়িক সমাধান হয়েছে। স্পষ্টতঃ এখানে গার্মেন্টস মালিকদের একতরফা বিজয় হয়েছে। চাকরি হারানোর ভয়ে আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার বন্ধ হওয়া কারখানার শ্রমিকরা দল বেঁধে কারখানায় প্রবেশ করে কাজ শুরু করেছেন। গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিকসহ সব পক্ষের সম্মতিতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে মালিকপক্ষ জানিয়েছে, ৫ বছর আলোচনার কোন সুযোগ নেই। তার মানে ২০১৮ সালের আগে বেতন-মজুরি বৃদ্ধিসহ সমস্যা থাকলে সেগুলো সমাধানের স্পষ্ট কোন সম্ভাবনা নেই। আর ২০১৮ সালের পরে কী হবে তাও পরিষ্কার করে উল্লেখ করেনি মালিকপক্ষ। গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে এর আগেও বিভিন্ন সময় আন্দোলন হয়েছে। তার অনেকগুলো ছিল শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিতে, আবার কিছু ক্ষেত্রে দেশের গার্মেন্টস সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে নাশকতা-ষড়যন্ত্রও ছিল। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সামাল দেয়া গেলেও শ্রমিকদের মনের মধ্যে থাকা দাবি ও ক্ষোভকে আমলে নিয়ে যৌক্তিক দাবিগুলো আলোচনার জন্য বিবেচনায় নেয়া জরুরি। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠনের উচিত শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনায় নেয়া, দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাতকে এগিয়ে নেয়া।