আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তিই ছিল আমার ‘মায়ের দোয়া।’ আমার কিছু হলেই মায়ের পায়ের কাছে শুয়ে বলতাম, মা আমাকে একটা ‘ফু’ দিয়ে দাও।
এ কথাগুলো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রয়াত আনিসুল হকের। গত বছর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে দেয়া বক্তব্যে নিজের মাকে নিয়ে বলতে গিয়ে একটা গল্পও শোনান তিনি।
আনিসুল হল বলেন, ‘একটি গল্প বলি। আমি তখন ম্যট্রিক পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার আগের রাতে আমার অনেক জ্বর। ১০৪ ডিগ্রী হবে। আমি সকাল বেলায় উঠে বললাম, মা আমি তো আর পরীক্ষা দিতে পারবো না। মা বললেন, এটা হয় নাকি রে বাবা? তুমি যদি এবছর পরীক্ষা না দাও, তাহলে তো তুমি ১ বছর ফেল করে যাবে।
তখন আমি ( আনিসুল হক) বললাম, আমার তো কোন উপায় নেই মা। আমি তো চোখে কিছু দেখছি না। তখন মা আমাকে অনেক দোয়া করে একটা ফু দিলেন। এরপর আমার হাত ধরে বললেন চলো যাই।
আনিসুল হক সে গল্পে আরো বলেন, ‘ওইদিন আমার ৩ ঘন্টার পরীক্ষা ছিল। কিন্তু ২ ঘন্টা পর আমি বেরিয়ে গেলাম।
মা বললেন পরীক্ষা ভাল হয়েছে বাবা? সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছো? আমি বললাম, না। মাত্র ৩৪ নম্বরের উত্তর দিয়েছি।
এরপর মা বললেন পাস কততে? আমি বললাম পাস ৩৩ এ। তোমার ফু তে আর কাজ হবেনা। মা বললেন, আচ্ছা। কাজ না হোক, আসো আর একটা ফু দিয়ে দেই।
তারপর, মা ওখানে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আমার গায়ে একটা ফু দিলেন। বিষয়টি কাকতালীয় হলেও সত্য যে, ‘ওই পরীক্ষায় আমি ৩৪ সে ৩৪ নাম্বারই পেয়েছিলাম।’
মা ভক্ত আনিসুল হক আজ বেচে নেই। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ২৩ মিনিটে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে মারা যান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এই মেয়র। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিসুল হক বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআইর সভাপতি ছিলেন। সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক আনিসুল হকের ছোট ভাই। ১৯৫২ সালের ২৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন আনিসুল হক।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)