চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

গর্ত থেকে অজিদের টেনে তুললেন স্মিথ-নাইল

স্বপ্নের ইনিংস নাথান কোল্টার-নাইলের! আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ স্কোরের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ইনিংসকে খাদের কিনার থেকে টেনে তুলেছেন ৩১ বছরের এ অলরাউন্ডার। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও দলকে লড়াইয়ের পুঁজি দিয়েছেন নাইল। স্টিভেন স্মিথ ৭৩ ও নাইলের ৯২ রানে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ২৮৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছে অজিরা।

অথচ এই অস্ট্রেলিয়া এতদূর এগোবে সেটা শুরুর ৮ ওভার শেষে ভাবাই যায়নি। সেই ওভারের চতুর্থ বলে শেলডন কটরেলের শর্ট বলে উইকেটরক্ষক শাই হোপের হাতে ধরা পড়ে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে খালি হাতে সাজঘরের পথ ধরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। অজিদের সংগ্রহ তখন মাত্র ৩৮। তার আগে ক্যারিবীয়দের শর্ট বলে কাত হয়ে ফিরে গেছেন ডেভিড ওয়ার্নার (৩), অ্যারন ফিঞ্চ (৬) ও উসমান খাজা (১৩)।

ক্যারিবীয়দের কাছে বিশ্বকাপে অজিদের এভাবে কুপোকাত হওয়া নতুন কিছু নয়। ১৯৯৬ আসরে মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল মার্ক টেলরের দল। আর যে মাঠে খেলা সেই ট্রেন্টব্রিজের সঙ্গেও অজিদের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। গত বছর এই মাঠেই অজি বোলারদের পিটিয়ে ওয়ানডের সর্বোচ্চ ৪৮১ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড।

বিপর্যস্ত অবস্থায় একজন কাণ্ডারির খোঁজে যখন মরিয়া এগিয়ে এলেন স্টিভেন স্মিথ। প্রমাণ করলেন এক বল টেম্পারিংয়ের পরও কেনো তাকে দলে পেতে মরিয়া ছিলেন নির্বাচকরা!

অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিসকে নিয়ে শুরুর বিপর্যয়টা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন স্মিথ। পঞ্চম উইকেটে দুজনে তোলেন ৫১ রান। ১৯ রানে স্টয়নিস ফিরলে স্মিথকে সঙ্গ দিতে আসেন উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি।

স্মিথ-ক্যারির ৬৮ রানের জুটিতে আস্তে আস্তে সম্মানজনক সংগ্রহের পথে হাঁটতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। উইকেটে থিতু হওয়ার পর দুজনেই রান তুলেছেন সমান তালে। ফিফটি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে ক্যারিকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভেঙে দেন রাসেল। অন্যপ্রান্তে স্মিথ তখন নিঃসঙ্গ যোদ্ধা।

তবে স্মিথ শেষ পর্যন্ত একা থাকেননি। সত্যিকার অর্থেই তাকে সঙ্গ দিয়েছেন অলরাউন্ডার নাথান কোল্টার-নাইল। এসেই শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ। দুজনের ব্যাটে অজিরা পেয়ে যায় লড়াই করার পুঁজি।

কোল্টার-নাইল যখন একপ্রান্তে আক্রমণ করছেন, অন্যপ্রান্তে স্মিথ তখন ছোটাচ্ছেন ব্যাটিং সৌন্দর্যের ফুলঝুরি। ১৪ মাস বাদে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে পান ২০তম ফিফটির দেখা। যেভাবে এগোচ্ছিলেন, হয়তো পেয়ে যেতে পারতেন শতকের দেখাও। তবে ওশানে থমাসের বলে শেষ পর্যন্ত থামতে হয়েছে ১০৩ বলে ৭৩ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে।

স্মিথ ফিরলেও কোল্টার-নাইল তার আক্রমণ চালিয়ে গেছেন। তারও সুযোগ ছিল ওয়ানডের প্রথম ফিফটিকে শতকে রূপান্তর করার। রান তোলায় মত্ত থাকা নাইল শেষ পর্যন্ত থেমেছেন সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৮ রান দূরে। বল খেলেছেন ৬০টি! ৮ চারের সঙ্গে বিশাল ছক্কার মার যাতে ৪টি। একসময়ে ৩৮ রানে ৪ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া শেষপর্যন্ত ৪৯ ওভার খেলে থামে ২৮৮ রানে।

ক্যারিবীয়দের হয়ে সেরা বোলার কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। ৬৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন থমাস, কটরেল ও আন্দ্রে রাসেল। উইন্ডিজের জন্য খানিকটা দুঃসংবাদ হল চোট নিয়ে পুরো ১০ ওভার শেষ করতে পারেননি রাসেল। ৮ ওভার করার পর ছাড়তে হয়েছে মাঠ।